র্যাব-১১ এর অভিযানে “রূপগঞ্জে কামাল হোসেন হত্যার অভিযোগে” যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দণ্ডিত আসামী সাদ্দাম’কে গ্রেফতার।
র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন ও আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার জন্য নিয়মিত সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে থাকে।
গত ২৪ মার্চ ২০২৪ ইং রবিবার নারায়ণগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালত নারায়ণগঞ্জ আদালতের বিচারক উম্মে সরাবন তহুরা ০৬ জন আসামীদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০,০০০/-টাকা জরিমানা অনাদায়ে ০৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এরমধ্যে ০৪ জন আসামী বিজ্ঞ আদালতে রায় প্রদান কালে জেল হাজতে আটক রয়েছে। যাহার মধ্যে ০৫নং আসামী শরীফ (২০) এবং ০৬নং আসামী সাদ্দাম (২৬) পলাতক রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বর্ণিত বিষয়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীদ্বয়কে গ্রেফতারে র্যাব গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করে। এক পর্যায়ে র্যাব-১১ একটি গোয়েন্দা দল গোপন তথ্যের মাধ্যমে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ০৬নং আসামী সাদ্দাম (২৬) এর অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। ফলশ্রুতিতে র্যাব উক্ত আসামীকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় সদর কোম্পানি, র্যাব-১১ অভিযানে গত ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী সাদ্দাম (২৬), পিতা-হালিম, সাং-গুতিয়ার, থানা- রূপগঞ্জ, জেলা- নারায়ণগঞ্জ’কে ডিএমপি, ঢাকার ধানমন্ডি থানাধীন জিগাতলা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
৪। মামলার বিবরণ সুত্রে জানা যায় রূপগঞ্জ উপজেলার গুতিয়াব গ্রামের ভিকটিম কামাল হোসেন জমির কেনা-বেচার ব্যবসা করতেন। সেই সুবাদে জমি বিক্রয়ের শর্তে ভিকটিম তার নিজ এলাকার মাহবুব রহমানের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা বায়না গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মাহবুব জমির টাকা দিতে না পারায় কামাল হোসেন বায়নার টাকা ফেরত দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে চরম বিরোধ ও প্রায় সময় কথা-কাটাকাটি চলছিল।
সেই বিবাদের সূত্র ধরে ২০১৪ সালের ২৪ জুন আসামী সাদ্দাম ও আরও ০৫ জন সহযোগী মিলে ভিকটিমকে টার্গেট করে রাস্তার মধ্যে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে ভিকটিম নিজের জীবন বাঁচাতে দৌঁড়ে তার বাড়িতে উঠলে সেখানেও আসামী ও তার সহযোগিরা ঘরের দরজা বন্ধ করে ভিকটিমকে মারধর করে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় ১৮৬০ সালে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২/৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৩৮(০৬)১৪। পরে এই মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে আসামির বিরুদ্ধে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আইনের ৩০২/৩৪ ধারায় অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বিজ্ঞ আদালত ২৪/০৩/২০২৪ ইং তারিখে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০,০০০/-টাকা জরিমানা অনাদায়ে ০৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
৬। এই নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০,০০০/-টাকা জরিমানা অনাদায়ে ০৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামীকে র্যাব-১১ এর আভিযানিক গোয়েন্দা দল কর্তৃক গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
৭। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।