কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলার হালসা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগে হালসা বাজারে মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনের আয়োজন করেন শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ, আমবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় জনতা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আমবাড়ীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন মকুল সাইফুল, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দাওয়াত মেম্বার, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান, হালসা কলেজের শিক্ষক আব্দুল মজিদ, হেলাল উদ্দিন, আব্দুর রহিম।
বক্তারা বক্তব্যে বলেন, হালসা ডিগ্রী কলেজে দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন জহুরুল ইসলাম। তিনি কলেজের সীমাহিন দূর্নীতি, অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার করেই চলেছেন। জানা যায়, কুষ্টিয়ার হালসা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের ৪র্থ শ্রেনীর ৯টি পদে নিয়োগ দেওয়ার বিপরীতে কলেজের উন্নয়ন ফান্ডে ৪০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন জহুরুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছেন কলেজের ২৫ শিক্ষক। গত ৫ই ফেব্রুয়ারী একই কলেজের ২৫ শিক্ষক স্বাক্ষরিত অনাস্থা পত্র জেলার মিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন শিক্ষকরা। দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে এই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সীমাহীন
দুর্নীতি, অনিয়ম এবং ক্ষমতার অপব্যবহার সহ নানা অভিযোগ এনে অনাস্থা পত্র দেন শিক্ষকরা।
আরো জানা যায়, ইতিপূর্বে কলেজের আয়-ব্যয় এর হিসাব পরিচালনার জন্য অধ্যক্ষ ও কলেজের ২জন সিনিয়র শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি হিসাব পরিচালিত হতো। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্ব নেওয়ার পর এই হিসাব বন্ধ করে নিজের নামে ব্যক্তিগত হিসাব খুলে কলেজের আয়-ব্যয় এর হিসাব পরিচালনা করছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম অত্র কলেজের ৯ টি পদে ৯ জন কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে প্রায় ৮০/৯০ লক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছেন বলে শোনা যায়। এই টাকা দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজের ইচ্ছামত কলেজে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করছেন। যার নির্মাণ মান এবং ব্যয় তদারকির জন্য কোন প্রকৃত যাচাই কমিটি নেই।
বর্তমানে বিল্ডিংটি আংশিক নির্মাণের পর ফান্ডের সব টাকা শেষ হয়ে গেছে বলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এছাড়া প্রতিবছর অত্র কলেজের শিক্ষার্থীদের বেতন ফিস ও ভর্তি বাবদ ৮/১০ লক্ষ টাকা আয় হয়। সেই সব টাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজের ইচ্ছেমত ব্যয় করেন। যা শিক্ষক/পরিচালনা কমিটিকে জানানো হয় না। সরকার প্রতিবছর উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্র/ছাত্রীদের বেতন বাবদ শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য যে বেতন প্রদান করেন সেই বেতনের টাকাও শিক্ষকদের না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজেই উত্তোলন করে ব্যক্তিগতভাবে ভোগ করেন। কলেজে ১টি বড় পুকুর আছে,
যা পূর্বে লিজ দেওয়া হতো। সেই লিজ বাতিল করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজেই ব্যক্তিগতভাবে এখন মাছ চাষ করেন। যার আয় ব্যায় এর কোন হিসাব জানা যায় না। অত্র কলেজে একটি শিক্ষক
কল্যাণ তহবিল” ছিল। যার ফান্ড পরীক্ষার ফিস সহ অন্যান্য আয় হতে ১৫% কর্তন করে তৈরী করা হয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সেই ফান্ড হতে শিক্ষকদের বাধ্য করে পর্যায়ক্রমে প্রায় ৯২ হাজার টাকা ধার নিয়ে অদ্যবধি পরিশোধ করেনি। উপরোন্ত একজন অনুগত শিক্ষকের সহযোগিতায় পরীক্ষার ফিস হতে ১৫% কর্তন করে নিজেই ভোগ করেন। এই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দ্বায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে শিক্ষক কর্মচারীরা কলেজ হতে নিয়মিত ঈদ বোনাস পেতেন। তিনি দ্বায়িত্ব গ্রহণের পরে সেই সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, বিগত ১২ বছর পর শিক্ষকদের আন্দোলন ও দাবীর প্রেক্ষিতে গত বছর ঈদ বোনাস দিয়েছেন তিনি। যা নিয়মিত হওয়া প্রয়োজন ছিল।
এছাড়াও জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিস্তর দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে জানা যায়