ধ*র্ষণের পরে অন্তঃসত্ত্বা নারী কে হত্যার প্রধান আসামী সোহেল মিয়া (৩২) গ্রেফতার
নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা থানাধীন আতকাপাড়া নিবাসী মোঃ আলাল উদ্দিন তার মেয়ে সুফিয়া খাতুন(২৭), তার আট ও ছয় বছরের ০২ সন্তান নিয়ে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন চন্দ্রপুর এলাকার আব্দুল হক মেম্বারের কলোনীতে থেকে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করত। একই জেলার দূর্গাপুর থানাধীন চন্ডিগড় গ্রামের নিবাসি আসামী মোঃ সোহেল মিয়া(৩২) একই কলোনীতে থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করত। তারা একই জেলার বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে আসামী মোঃ সোহেল মিয়া তাদের সাথে শখ্যতা গড়ার মাধ্যমে মোঃ আলাল উদ্দিনের বাসায় প্রায়শই আসা যাওয়া করত। আলাল উদ্দিনের বাসায় আসা যাওয়ার সুযোগে আসামী মোঃ সোহেল মিয়া আলাল উদ্দিনের বিবাহিত মেয়ে ও দুই সন্তানের জননী সুফিয়া খাতুন(২৭) এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। রাজমিস্ত্রির কাজ না থাকায় আলাল উদ্দিন তার মেয়ে এবং মেয়ের দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ীতে চলে আসলে, আসামী মোঃ সোহেল মিয়া প্রায়শই আলাল উদ্দিনের গ্রামের বাড়ীতে বেড়াতে আসত। একপর্যায়ে আসামী মোঃ সোহেল মিয়া(৩২) ভিকটিম সুফিয়া খাতুনকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাবেক স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ ঘটায় এবং গত ২১/০৩/২০২৩খ্রি. তারিখ সহ পরবর্তী বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে ভিকটিম সুফিয়া খাতুনকে তার নিজ বসত ঘরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধ*র্ষণ করে। একপর্যায়ে ধ*র্ষণের ফলে ভিকটিম অন্তঃসত্বা হলে ভিকটিম সুফিয়া খাতুন আসামী সোহেল মিয়াকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। ঐ সময় আসামী মোঃ সোহেল মিয়া ভিকটিম সুফিয়া খাতুনকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং তার গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করতে চাপ দেয়। কিন্তু ভিকটিম সুফিয়া খাতুন তার গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করতে রাজি না হলে গত ১৪/০৮/২০২৩খ্রি. তারিখ বিকাল অনুমান ৫.৩০ ঘটিকার সময় আসামী মোঃ সোহেল মিয়া ভিকটিমের বসত ঘরে আসিয়া তার গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের পেটে স¦জোরে লাথি ও পা দিয়া চাপ দেয় এতে ভিকটিমের প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হলে, ভিকটিমের আতœীয় স্বজন তাৎক্ষনিক ভিকটিমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ভিকটিমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়া ৫ মাসের সন্তানের গর্ভপাতের বিষয়টি নিশ্চিত করে। ভিকটিম চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় উক্ত ঘটনায় তার পিতা মোঃ আলাল উদ্দিন বাদী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে দরখাস্ত দাখিল করিলে, বিজ্ঞ আদালত বাদীর অভিযোগখানা কলমাকান্দা থানায় প্রেরণ এবং মামলা রুজু করার আদেশ জারী করেন। উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে কলমাকান্দা থানায় মামলা রুজু হয়। যা কলমাকান্দা থানার মামলা নং-২৪/২৫০, তাং-২৬/০৯/২০২৩ ইং, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০( সংশোধনী ২০২০) এর ৯(১) তৎসহ ৩১৩/৩২৩ পেনাল কোড ১৮৬০। ইতিমধ্যে গত ২৫ আগস্ট ২০২৩খ্রি. তারিখ উক্ত ঘটনায় ভিকটিম সুফিয়া খাতুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরন করিলে, থানা পুলিশ মৃতের লাশের সুরুতাল রির্পোট প্রসÍত পূর্বক ময়না তদন্ত করান। ময়না তদন্তের রিপোর্ট প্রাপ্তির পর থানা পুলিশ পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলিয়া কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনর্চাজ নিশ্চিত করেন। বর্ণিত বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং আসামী মোঃ সোহেল মিয়া গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায়। এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময় পালিয়ে আত্মগোপনে থাকে। র্যাবের বিভিন্ন গোয়েন্দা নজরদারী এবং তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে আসামীর অবস্থান জানার চেষ্টা করে এবং তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নেত্রকোনা জেলার দূর্গাপুর থানাধীন সাতাশি এলাকায় আসামীর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অদ্য ১৭/১২/২০২৩খ্রি. তারিখ রাত ১:০০ ঘটিকায় নেত্রকোনা জেলার দূর্গাপুর থানাধীন সাতাশি এলাকায় র্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের একটি চৌকশ আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলার আসামী মোঃ সোহেল মিয়া, পিতা-মোঃ হাছেন আলী, গ্রাম-সাতাশি, উপজেলা-দূর্গাপুর, জেলা-নেত্রকোনা’কে গ্রেফতার করে। নির্যাতন করে হত্যার মত জঘন্য ঘটনার বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ সোহেল মিয়ার বিরুদ্ধে তার পূর্বের স্ত্রী নুরজাহানের দায়েরকৃত যৌতুক মামলায় ২০১৫ সালে দুই মাস কারাবাস ছিল। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দূর্গাপুর থানায় একাধিক মারামারির মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কলমাকান্দা থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।