সেলিম বাবু স্টাফ রিপোর্টারঃ
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখােলা ইউনিয়নের জুগিন্দা গ্রামে বৃষ্টি খাতুন (১৪) নামের এক স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। স্কুল ছাত্রী বৃষ্টি জুগিন্দা গ্রামের বাজারপাড়ার আসাদুল হকের মেয়ে। বৃষ্টি স্থানীয় জুগিন্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। প্রতিবেশী দর্জি শরিফুল ইসলামের শ্লীতাহানির কারণে অভিমানে বৃষ্টি আত্মহত্যা করেছেন এমন অভিযােগ করেন তার মা সাগরী খাতুন।
তবে অনেকে জানিয়েছেন বাবার সাথে মােবাইলফােন কিনে নিতে চেয়ে, না পেয়ে সে অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন। দর্জি শরিফুল জুগিন্দা গ্রামের বাজারপাড়ার সদর আলীর ছেলে।
সােমবার (২৯ জুলাই) সকালের দিকে বৃষ্টি কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যায় পােষাক তৈরী করে নেয়ার জন্য বৃষ্টি খাতুন প্রতিবেশী দর্জি শরিফুল ইসলামের বাড়িতে যায়। শরিফুল পােষাক তৈরীর জন্য বৃষ্টির শরীরে মাপ নিতে গিয়ে শ্লীলতাহানি করে। বৃষ্টি বিষয়টি তার দাদি মাজেদা খাতুনকে জানায়। এসময় দাদি মাজেদা নাতনীর শ্লীলতাহানির অভিযােগ নিয়ে শরিফুলের কাছে যান। বিষয়টি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয় শরিফুল। এদিকে বৃষ্টি নিজ শয়নকক্ষের দরজা লাগিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। দাদি মাজেদা শরিফুলের বাড়ি থেকে ফিরেই দেখেন বৃষ্টির শয়নকক্ষটি ভিতর থেকে তালাবদ্ধ। দাদি প্রতিবেশীদের সহায়তায় শয়নকক্ষের তালা ভেঙ্গে দেখতে পান বৃষ্টি ঘরে সিলিংফ্যানের সাথে ঝুলছে। এসময় আহত বৃষ্টিকে উদ্ধার করে প্রথমে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখা দিলে, রাতেই সেখান থেকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। সােমবার সকালের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
দর্জি শরিফুল ইসলাম বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, আমার স্ত্রীর উপস্থিতিতে পােষাক তৈরীর জন্য বৃষ্টির শরীরের মাপ নিয়েছিলাম। বৃষ্টি বিভিন্ন ছেলের সাথে প্রেম করে বেড়াতাে। প্রেমিকের সাথে কথা বলার জন্য পরিবারের কাছে স্মাট মােবাইলফােন চেয়েছিল। মােবাইলফােন না পেয়ে অভিমানে সে আত্মহত্যা করেছে বলে আমার ধারণা। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে এ দােষ আমার উপর চাপানাের চেষ্টা করছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির বয়স যখন ৪ বছর। তখন তার মা সাগরী খাতুন বৃষ্টির বাবাকে ছেড়ে অন্যত্র বিয়ে করেন। শৈশব কাল থেকেই বৃষ্টি বাবার কাছেই বড় হয়। তবে বৃষ্টির সাথে তার মা যােগাযােগ রেখেছিলেন।
এদিকে, সোমবার বিকেলে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃষ্টির ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর হয়। এবং রাতে মরদেহ স্থানীয় গোরস্থান ময়দানে দাফন করা হয়।
এবিষয়ে গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, আত্মহত্যার ঘটনায় বৃষ্টির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঠিকানাঃ অস্থায়ী কার্যালয়ঃ হাউজিং নং – ১১১ (নিচ তলা), রোড নং-১১, ই-ব্লক, ইাউজিং এস্টেট, কুষ্টিয়া সদর, কুষ্টিয়া।
কপিরাইট © ২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত