মোঃ নাঈম হোসেন পলোয়ান।চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জঃ
সম্প্রতি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আমাদের জীবনধারণের ক্ষেত্রে বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্বাভাবিক ও আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। ফলে দৈনন্দিন জীবনে নেমে এসেছে অপ্রত্যাশিত দুর্ভোগ। বিশেষজ্ঞের মতে, আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ একাধিক। প্রথমত, মুনাফালোভী মজুতদাররা প্রায়ই অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য পণ্যদ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়। দ্বিতীয়ত, বহির্বিশ্বে খাদ্যদ্রব্যের সংকট ও মূল্যের ঊর্ধ্বগতি। তৃতীয়ত, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি। দেশের একটি ক্ষুদ্র অংশ বাড়তি বেতন-ভাতা পেলেও অসুবিধার দায়ভার বহন করছে সমাজের বৃহত্তর অংশ। লক্ষণীয় ব্যাপার এই যে, সরকার কর্তৃক বেতন-ভাতা ঘোষণার পরক্ষণেই অজ্ঞাত কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে। নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের দাম গত কয়েক বছরে কয়েক গুণ বেড়েছে। জীবনধারণের জন্য সর্বপ্রথম যেটি প্রয়োজন সেই খাদ্যদ্রব্যের অধিকাংশের মূল্যই এখন আকাশচুম্বী। ন্যায়সংগত ও নির্ধারিত মূল্য বলতে এখন যেন কিছুই নেই। এছাড়া দফায় দফায় দাম বাড়লেও সাধারণ মানুষের রোজগার বাড়ছে না সেই মাত্রায়। ফলে সীমিত আয়ে সংসার সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সেই সাথে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কারণে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।
বাজার গবেষক অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘মূল্যবৃদ্ধি এ দেশে এটাই প্রথম নয়। তবে বর্তমানে এটি একটি অনিবার্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে মূল্যবৃদ্ধিজনিত এমন নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টির ঘটনা বিরল। অন্য দেশে এমনটি ঘটলে বিক্ষোভ দানা বাঁধে, সরকারকে জবাবদিহি করতে হয়।’ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার বাজার মনিটরিং, কৃষিপণ্যে ভর্তুকি দেওয়া ইত্যাদি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কিন্তু এসব পদক্ষেপ যথেষ্ট না হওয়ায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির লাগাম টানা যাচ্ছে না।
এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়লেও দুর্নীতিবাজ কর্মচারী ও মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের টাকার অবমূল্যায়ন হচ্ছে বারবার। গুণগত মান এবং যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবে আমাদের উৎপাদিত পণ্য বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। এসব ঘটনায় কেউ কেউ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ফায়দা লুটে নিচ্ছে। দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে এমন অমানবিক সমস্যায় পীড়িত করে যারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত তারা দেশ ও জাতির শত্রু। এসব অসৎ ও দুর্নীতিবাজ লোকদের উৎখাত এখন সময়ের দাবি।