কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: মাজেদুল ইসলাম :=
মামলার মূলরহস্য উদঘাটন, বিজ্ঞ আদালতে আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান
চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা থানাধীন হাটবোয়ালিয়া বাজারস্থ জাহাঙ্গীরের দোকানের কর্মচারী ভিকটিম মোস্তফা প্রতিদিনের ন্যায় দোকানের কাজ শেষে গত ১৪.০৮.২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৯:৩০ ঘটিকার সময় বাড়ি ফেরার পথে অজ্ঞাতনামা আসামী/আসামীদের হাতে নিহত হয়।পরবর্তীতে ভিকটিম মোস্তফার লাশ গত ২৪.০৮.২০২৩ খ্রিঃ তারিখে আলমডাঙ্গা থানাধীন মহেষপুর-বাঁশবাড়ীয়া ফেরিঘাট নামক মাথাভাঙ্গা নদীতে ভাসমান অবস্থায় জনসাধারণ দেখে সংবাদ দিলে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ উদ্ধার করে। ভিকটিমের মা শাহিদা খাতুন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আলমডাঙ্গা থানার মামলা নং-২৬, তারিখ-২৪.০৮.২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব আব্দুল্লাহ্ আল-মামুনের সার্বিক দিকনির্দেশনায় জনাব মোঃ নাজিম উদ্দিন আল-আজাদ, পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) ও জনাব আনিসুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), চুয়াডাঙ্গার তত্বাবধায়নে জনাব ফেরদৌস ওয়াহিদ, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা, চুয়াডাঙ্গার নেতৃত্বে বর্ণিত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর কামরুল হাসান, হাটবোয়ালিয়া পুলিশ ক্যাম্প, আলমডাঙ্গা, সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) তে কর্মরত সাব-ইন্সপেক্টর সাজ্জাদ হোসেন, শিহাব উদ্দিন, সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর রমেন সরকার, রজিবুল হক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানাধীন ১৩নং সেক্টর পূর্বাচল এলাকা হতে মূল আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। উক্ত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, হাটবোয়ালিয়া দোকান মালিক জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই অত্র মামলার ১নং আসামী গোলাম মোস্তফা সজিবের সাথে গ্রেফতারকৃত আসামী আকরাম দোকানের মালামাল ক্রয় সূত্রে পূর্বপরিচিত। আসামী আকরাম বিভিন্ন এনজিও সংস্থার নিকট থেকে ঋণ নিয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে সজিবকে জানায়। আসামী সজিব গ্রেফতারকৃত আসামী আকরামকে বলে যে, তার একটি কাজ করে দিলে সে মোটা অংকের টাকা দেবে যা দিয়ে এনজিও লোনের টাকা পরিশোধ করতে পারবে। তখন আসামী সজিব ঘটনার ৪/৫ দিন পূর্বে হাটবোয়ালিয়া ফুটবল মাঠে বসে আসামী আকরামকে বলে, সে দোকানের ক্যাশের ড্রয়ার থেকে টাকা-পয়সা ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় ভিকটিম মোস্তফা দেখে ফেলে এবং আসামী সজিবের ভাই দোকান মালিক জাহাঙ্গীরকে বলে দেয়। এই নিয়ে দোকান মালিক জাহাঙ্গীর ও তার ছোট ভাই আসামী সজিবের সাথে মনোমালিন্য হয়। আসামী সজিব ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানের কর্মচারী ভিকটিম মোস্তফাকে দোকানে না আসার জন্য হুমকি প্রদান করে। ভিকটিম মোস্তফা ভয়ে কিছুদিন দোকানে আসেনা। ঘটনার দিন দোকান মালিক জাহাঙ্গীর ভিকটিম মোস্তফার বাড়িতে যেয়ে অনুরোধ করে দোকানে নিয়ে আসে। ভিকটিম মোস্তফা দোকানের কাজ শেষে গত ১৪.০৮.২০২৩ খ্রিঃ রাত অনুমান ০৯:১৫ ঘটিকার সময় বাড়ি ফেরার পথে হাটবোয়ালিয়া মাথাভাঙ্গা নদীর উপর অবস্থিত স্টিল ব্রীজ পার হয়ে যাওয়ার সময় পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ওৎ পেতে আসামী সজিব ও আকরাম পিছন থেকে ভিকটিম মোস্তফাকে ডাক দেয়। তাদের ডাকে মোস্তফা ফিরে আসলে আসামী আকরাম কৌশলে ভিকটিমকে ব্রীজের পূর্ব-দক্ষিণ পার্শ্বে পানের বরজের মধ্যে নিয়ে আসামী সজিব ও আকরাম চড়-থাপ্পড় মারলে ভিকটিম মোস্তফা চিৎকার করতে গেলে মুখে গামছা চেপে ধরে। এতে ভিকটিম মোস্তফা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তখন আসামী আকরাম ও সজিব ভিকটিম মোস্তফার হাত পা বেঁধে নাক-মুখে গামছা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে আসামী সজিব ও আকরাম ভিকটিম মোস্তফাকে মাথাভাঙ্গা নদীতে থাকা মাছ ধরা বাঁশের খুঁটির সাথে পানির নিচে ভিকটিম মোস্তফার কোমরের বেল্টের সাথে গামছা দিয়ে বেধে রাখে। আসামী সজিব ঘটনার পরের দিন আসামী আকরামকে ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা দিয়ে ঢাকায় চলে যেতে বলে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ও ঠিকানাঃ
১। মোঃ আকরাম হোসেন(২৪), পিতা-মোঃ আকুব্বর আলী, সাং-মোড়ভাঙ্গা, থানা-আলমডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা। সে বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে। উল্লেখ্য, অন্য আসামী সজিবকে পূর্বেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত