রক্তপাত শুরু হয় : ভুল অস্ত্রোপচারে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ
চিকিৎসকের ভুল অস্ত্রোপচারে নড়াইলের কদমতলা গ্রামের আসমা খানম নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা ঘটেছে নড়াইল শহরের পপুলার সার্জারি এন্ড নার্সিং হাসপাতালে।
জানা গেছে, কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ি ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের আলাল শেখের মেয়ে আসমা খানম গত ২৮মে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য নড়াইল শহরের পপুলার সার্জারি এন্ড নার্সিং হাসপাতালে ভর্তি হন। দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. নুরুজ্জামান তাকে সিজারিয়ান অপারেশন করে পূত্র সন্তনের জন্ম দেন। রোগীকে বিছানায় দেবার আধাঘণ্টা পর থেকে রক্তপাত শুরু হয়। এর একঘণ্টা পর ডাক্তার নুরুজ্জমান রোগীর ২য় দফা অপারেশন করেন।
এরপর রোগীর রক্তপাত আরও বেড়ে যায়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে আইসিইউ ফাঁকা না থাকায় ইসলামী ব্যাংকহাসপাতাল কাকরাইল শাখায় ভর্তি করা হয় এবং পরদিন সকাল থেকে তাকে লাইফ সার্পোটে নেয়া হয়। রোগীর পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় ১ জুন রোগীকে মুগদা হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে। আসমার ২০ মাস বয়সের একটি ছেলে সন্তান আছে।
নিহত প্রসূতি আসমার বোন হুসনা খানম বলেন, নড়াইলের চিকিৎসক আমার বোনের দ্বিতীয়বার অপারেশন করলেও প্রথমে আমাদের কিছুই জানাননি। পরে ডাক্তার জানিয়েছেন, আসমার জরায়ুতে টিউমার ছিল। তাই ব্লিডিং বন্ধ করতে অপারেশন করেছেন। রোগীর মাংসের ভেতর দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ দিয়ে রক্ত ছেড়ে দিচ্ছিল।
আসমার বাবা আলাল শেখ বলেন, তার মেয়েকে নড়াইলে ৪ ব্যাগ এবং ঢাকায় ৩০ ব্যাগ রক্ত দেয়া লেগেছে। আমরা অত্যন্ত গরীব মানুষ, কৃষি কাজ করি। ধার দেনা করে প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ করেও মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না। মামলার বিষয়ে বলেন, মেয়েতো চলেই গেছে। আমাদের দাবি এভাবে যেন কোনো রোগী ভুল অপারেশনে মারা না যায়।
ভুল চিকিৎসার বিষয়ে চিকিৎসক ডা. নুরুজ্জামান বলেন, প্রসূতির অপারেশনে কোথাও ভুল ছিল না। রোগীর অবস্থা একেবারে খারাপ ছিল না। রোগীর স্বজনরাই জোর করে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. সাজেদা বেগম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।