রাজশাহীতে ধান কাটতে গিয়ে বিষধর রাসেল ভাইপার সাপের ছোবল খেয়েছেন হেবজুল ইসলাম (৪৫) নামের কৃষক। পরে সেই সাপ মেরে ব্যাগে ভরে সোজা হাজির হন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।
শুক্রবার (৩১ মে) রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার পদ্মার চরে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে হেবজুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার সকালে ধান কাটতে গিয়েছিলাম পদ্মার চরে। এক পর্যায়ে একটি রাসেল ভাইপার সাপ সামনে পড়ে। এসময় সাপটিকে ধান কাটার কাস্তে দিয়ে মাটিতে চেপে ধরার চেষ্টা করি। পরেই লাফিয়ে সাপটি চোয়ালে ছোবল দেয়। আমি আহত হলেও সাপটিকে মেরে ফেলেছি। পরে মৃত সাপটি ব্যাগে ভরে হাসপাতালে চলে আসি।
সাপটি হাসপাতালে নিয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কী সাপে কামড়েছে, তা চিকিৎসকদের ঠিকঠাক জানালে চিকিৎসায় সুবিধা হয়, এ কারণে সাপটাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. ফাহিমা সুলতানা বলেন, ‘সাপের ছোবলে মুখের চোয়াল কিছুটা ফুলে গেলেও তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।’
তিনি আরও জানান, ‘অনেকেই সাপে দংশনের পর কবিরাজের কাছে যান, তিনি এটি না করে সরাসরি হাসপাতালে চলে এসেছেন। এটি সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল।’
হেজবুলের স্ত্রী ময়না আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীকে সাপে কামড়েছে, এতে করে তিনি ভয় না পেলেও আমি পেয়েছি। তার সাহস দেখে আমি অবাক হয়েছি। আশা করি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
এর আগে গেল ৬ মে সন্ধ্যায় চারঘাটে পদ্মার পাড়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়ার সময় রাসেল ভাইপারের দংশনে মারা গেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাকিনুর রহমান সাব্বির। এর আগেও একই এলাকায় কৃষিকাজ করতে গিয়ে একই সাপের ছোবলে মারা গেছেন আরও এক কৃষক।
রাজশাহীর সাপ গবেষক বোরহান বিশ্বাস রুমন বলেন, ‘ঘন ঝোপ আর পরিত্যক্ত জমি অপেক্ষাকৃত কমে যাওয়ায় এই সাপ নদীর তীরের কৃষি জমিতেই থাকে। ফলে যারা মাঠে কৃষিকাজ করেন তারা রাসেল ভাইপারের দংশনের সবচেয়ে বেশি শিকার হন।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাসেল ভাইপার সাপ চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামেও পরিচিত। দেশে যেসব প্রজাতির সাপ রয়েছে তার মধ্যে এই সাপ সবচেয়ে বিষাক্ত। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী চরাঞ্চলে এ সাপের বেশি দেখা মেলে।’