মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থেকে প্রায় ছয় মাস আগে নিখোঁজ হন মানসিক ভারসাম্যহীন মো. সেলিম (৪০)। রাজধানীর মিরপুরে মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তাকে উদ্ধার করেছেন পরিবারের সদস্যরা। সেলিম ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বৃ-পাঁচাশি গ্রামের মো. হাসিম উদ্দিনের ছেলে।
আলোচিত ও সমালোচিত মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার হোম থেকে উদ্ধার হওয়া ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মো: সেলিম মিয়ার (৪৫) দুটি কিডনিই ঠিক আছে বলে নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসক।
শনিবার (১১ মে) রাতে নগরীর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগের চিকিৎসক ডা. সৈয়দ হাসানুল ইসলাম আকাশ।
তিনি বলেছেন, রোগীকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে যে তার শরীরে কোনো অস্ত্রোপচার করা হয়নি। দুটি কিডনিই ঠিক রয়েছে। কিন্তু যে জায়গায় কিডনি থাকে সে যায়গায় ক্ষত থাকায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, রোগী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তাকে আটকে রাখার জন্য কোনো কিছু দিয়ে বেঁধে রাখা বা বেল্ট পরিয়ে রাখার কারণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় সেলিমকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সেলিমের চাচাতো ভাই ও স্থানীয় গ্রাম পুলিশের সদস্য আবদুর রশিদ বলেন, সেলিমকে উদ্ধারের পর পেটে কাটা দেখে সন্দেহ হয় কিডনি খুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। ডাক্তার জানিয়েছে, সেলিমের দুটি কিডনিই ঠিক আছে। তবে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আপাতত ভর্তি না করে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রোববার সেলিমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হবে চিকিৎসার জন্য।
গত ৭ মে ঢাকার সাভারে অবস্থিত মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার হোম থেকে সেলিমকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিম ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের বৃপাচাশী গ্রামের দরিদ্র হাসিম উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, প্রায় ছয় মাস আগে মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিম নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে হতাশা হয়ে পড়েন পরিবারের লোকজন। এরই মধ্যে মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেলিমের খোঁজ পায় তার পরিবার। এরপর গত ৭ মে সেলিমের মা রাবিয়া, চাচাতো ভাই আব্দুর রশিদ সেলিমের সন্ধানে ঢাকার চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে গিয়ে থানা পুলিশের সহায়তায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সেলিমকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর সেলিমের পেটে ক্ষত চিহ্নিত দেখে পরিবার ও স্থানীয়রা তার কিডনি কেটে নেওয়া হয়েছে বলে সন্দেহ করলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।