চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও এলাকার চাঞ্চল্যকর রেস্টুরেন্ট কর্মচারি রিয়াদ হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি কিশোর গ্যাং লিডার রুবেল (৩৫)’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
“বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ১৩ মার্চ ২০২৪ইং তারিখ চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানাধীন হামিদচর এলাকার কর্ণফুলী রিভারভিউ রেস্টুরেন্টে তুচ্ছ ঘটনায় কথা কাটাকাটির জের ধরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে মোহাম্মদ রিয়াদ (২৬) নামে রেস্টুরেন্ট কর্মচারী খুন হয়। গত ১৩ মার্চ ২০২৪ইং তারিখ মধ্যরাতে রেস্টুরেন্টের মালিক মোহাম্মদ ইকবালের সঙ্গে বাবুল মিয়া নামক স্থানীয় এক যুবকের কথা কাটাকাটি হয়। উক্ত ঘটনার জের ধরে বাবুলের অনুসারীরা ধৃত আসামি সাইফুল এর নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইকবালের রেস্টুরেন্টে হামলা চালায়। এ সময় রেস্টুরেন্টের কর্মচারীরা বাধা দিলে তাদের বেধরক মারধর করে। হামলাকারীদের আঘাতে রেস্টুরেন্টে কর্মরত আনুমানিক ০৮ জন কর্মচারী গুরুতর আহত হয়। পরবর্তীতে সংবাদ পেয়ে চান্দগাঁও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ এবং ঘটনার সাথে জড়িত ০২ জন আসামিকে আটক করতে সক্ষম হয়। আহতদের মধ্যে রিয়াদ নামের রেস্টুরেন্ট কর্মচারী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৪ মার্চ ২০২৪ইং তারিখ রাত আনুমানিক ০২০০ ঘটিকায় মৃত্যুবরণ করেন। নিহত রিয়াদ রিভারভিউ রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক পদে র্কমরত ছিল। উপর্যপুরি ছুরিকাঘাতে অধিক রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। উল্লেখ্য, উক্ত নৃশংস হত্যার ঘটনাটি চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ব্যাপক আলোচিত ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
উক্ত ঘটনায় রেস্টুরেন্ট মালিক মোহাম্মদ ইকবাল বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৬, তারিখ-২০ মার্চ ২০২৪ইং, ধারা- ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/ ৩২৫/ ৩২৬/ ৩০৭/ ৪২৭/৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলা দায়ের হওয়ার পর আসামিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
বর্ণিত হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামালার এজাহার নামীয় পলাতক আসামি কিশোর গ্যাং লিডার রুবেল চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানাধীন জুঁইদন্ডী এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ১৩ এপ্রিল ২০২৪ইং আনুমানিক ১৬৪০ ঘটিকায় বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামি রুবেল (৩৫), পিতা-মোঃ রফিক, সাং-হামিদচর, থানা-চাঁন্দগাও, জেলা-চট্টগ্রাম মহানগরীর’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত নৃশংস হত্যা মামলার পলাতক আসামি মর্মে স্বীকার করে। উল্লেখ্য যে, গত ২৪ মার্চ ২০২৪ইং তারিখ বর্ণিত মামলার আরেক আসামি মোঃ সাইফুল (৩৮)’কে গ্রেফতার করতঃ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের চাঁন্দগাও থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে চট্টগ্রাম মহানগরীর চাঁন্দগাও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত