রাউজানে মুক্তিপণ দাবী করায় ঘটনায় চার গ্রাম পুলিশকে অব্যাহতি দিলে ও থানার কোন মামলা হয়নি
রাউজান প্রতিনিধিঃ মো আবদুল লতিফ নাহিদ
কৃষক এরশাদকে আটক করে মুক্তিপণ দাবী করার ঘটনায় রাউজানের হলদিয়া ইউনিয়নের চার গ্রাম পুলিশকে চাকুরী থেকে অব্যাহতির সুপরিশ করে চিঠি দিয়েছেন হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। গত ৪ মার্চ বৃহস্পতিবার। অব্যাহতি দেওয়া গ্রাম পুলিশেরা হলেন, জুয়ৈল, ওসমান, শাহাজাহান, মাসুদ।
গত ১ এপ্রিল সোমবার দিবাগত রাতেই উত্তর সর্তা এলাকার বাসিন্দা দিনমজুর কৃষক মোঃ এরশাদ তার বাড়ী যাওয়ার পথে গ্রাম পুলিশ জুয়েল, শাহাজাহান, ওসমান, মাসুদ এরশাদকে আটক করেন। ঐ সময়ে এরশাদ মদ্যপায়ী অবস্তায় ছিলেন। এরশাদ গ্রাম পুলিশ জুয়েলকে মুখে থাপ্পর দেয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৪ গ্রাম পুলিশ কৃষক এরশাদের স্ত্রী সোলিনা আকতারের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা আদায় করে এরশাদকে রাতেই ছেড়ে দেয়। পরদিন গত ২ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে কৃষক এনশাদ তার বাড়ীর পাশে জমিতে গরুর জন্য ঘাষ কাটতে গেলে গ্রাম পুলিশ জুয়েল, শাহাজাহান, ওসমান, মাসুদ এরশাদকে জোরপুবৃক অপহরন করে হলদিয়া রাবার বাগানের গহিন অরণ্যে নিয়ে যায়। হলদিয়া রাবার বাগানের গহিন অরণ্য এরশাদকে আটক রেখে চার গ্রাম পুলিশ তার স্ত্রী সেলিনা আকতারের কাছে ১লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে।
এরশাদের স্ত্রী সেলিনা আকতারের সাথে মুক্তিপণের টাকার দর কষকষির এক পর্যায়ে একলাখ টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকায় মুক্তিপণ ধার্য করেন। গ্রাম পুলিশের চার সদস্য। ঘটনার দিন বিকালে এরশাদের স্ত্রী সেলিনা আকতার হলদিয়া রাবার বাগান এলাকারগহিন অরণ্যে তার স্বামী এনশাদকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে, ঐ সময়ে চিকদাইর পুলিশ ফাড়ির এ, এস আই হোসাইন সহ পুলিশেরএকটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গ্রাম পুলিশ ও তাদের সহাযতাকারী লোকজন পালিয়ে যায়। কৃষক এরশাদকে উদ্বার করে বলে জানান এ এস আই হোসাইন।
ঐ স্থাান থেকে দুটি মোটর সাইকেল জব্দ করেন পুলিশ। পরে এরশাদকে তার স্ত্রী সেলিনা আকতারের জিম্মায় দেওয়া হয়। চার গ্রাম পুলিশ কৃষক এরশাদকে অপহরন করার ঘটনা সাধারন মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে, ঘটনাকে ধামা চাপা দিতে চার গ্রাম পুলিশ ও তাদের লালন পালনকারী একটি মহল।
ঘটনার সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত হলে গত ৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার হলদিয়া ইউয়িনের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চার গ্রাম পুলিশেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগজ্যাই মারমার কাছে চিটি দেয়। এছাড়া ও অব্যাহতি দেওয়া চার গ্রাম পুলিশ মহিলাদের কাছ থেকে মাতৃত্ব ভাতা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসুচির আওতায় বয়স্ক ভাতা, স্মামী পরিত্যক্ত ভাতা বিধাবাভাতা, প্রতিবন্দ্বী ভাতা ভোগিদের কাছ থেকে চাদাঁ আদায় করেন।
এলাকার ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের মাসেহারা নিয়ে ইয়াবা সহ মাদক পাচার কাজে সহায়তা করতো। গ্রাম পুলিশের পরিচয়ে রাতেই মোটর সাইকেল নিয়ে এলাকায় ঘুরে মাদক পাচারকারীও মাদক ব্যবসায়ীদের সহায়তা করতো। এলাকার নিরিহ মানুষকে ধরে নিয়ে হলদিয়া রাবার বাগানের গহিন অরণ্যে আটক রেখে তাদের কাছ থেকে চাদাঁ আদায় করতো। আটক করে রাখা নিরিহ মানুষ যারা চাদাঁর টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করতো তাদেরকে শারিরিক নির্যাতন করে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইয়াবা ও পাহাড়ী চোলাই মদ এনে তাদেরকে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক পাচারকারী বানিয়ে পুলিশের কাছে সোর্পদ করতো চার গ্রাম পুলিশ।
কৃষক এরশাদকে অপহরন করে হলদিয়া রাবার বাগানের গহিন অরণ্যে আটক রেখে মুক্তিপণ দাবীর ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশিত হলে চার গ্রাম পুলিশকে অব্যাহতি দিলে ও তাদের বিরুদ্বে মামলা করতে সাহস পায়নি দরিদ্র কৃষক মোঃ এরশাদ। অব্যাহতি দেওয়া চারগ্রাম পুলিশেকে মামলা থেকে রক্ষা করতে চার গ্রাম পুলিশ ও তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে হলদিয়ার মাদক পাচার কারী সিন্ডিকেটের এক আলোচিত নেতা। এরশাদ ওতার পরিবারের সদস্যদের ভয় দেখিয়ে মামলা করতে দেওয়া হচ্ছেনা বলে এলাকার অধিকাংশ মানুষ তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন।
রাউজান থানার ওসি জহিদ হোসেন বলেন, চার গ্রাম পুলিশের নির্যাতনের শিকার কৃষক এরশাদ ঘটনার ব্যাপারে অভিযোগ করেন। পরবর্তী কৃষক এরশাদকে এধিকবার সংবাদ দেওয়া হলেও এরশাদ রাউজান থানায় আসেনি মামলা করতে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত