কক্সবাজারের উখিয়া থেকে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রীকে জোরপূর্বক অপহরণ; চট্টগ্রাম মহানগরীর লালখান বাজার থেকে অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধারসহ অপহরণকারী মোঃ শাহিন আলম (২১)’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব -৭।
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
অপহৃত ভিকটিম (১৬) কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী। একই গ্রামের বখাটে মোঃ শাহিন আলম ভিকটিমকে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যত করে আসছিল। অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্কুল ছাত্রী প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হলে বখাটে মোঃ শাহিন আলম তার পরিবারের লোকজন দিয়ে ভিকটিমের পরিবারের নিকট বিবাহের প্রস্তাব পাঠায়। বখাটের শাহিন আলমের স্বভাব-চরিত্র ভাল না হওয়ায় এবং ভিকটিম অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় উক্ত বিবাহের প্রস্তাব ভিকটিমের পরিবার প্রত্যাখান করে। বিবাহরে প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় বখাটে শাহিন আলম ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমকে অপহরণ করার হুমকি প্রদান করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ইং আনুমানিক ১৭০০ ঘটিকায় ভিকটিম প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ী ফেরার পথে উখিয়া থানাধীন রুমখাঁ পালং ত্রিরত্ন উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে চৌরাস্তার মোড়ে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বখাটে শাহিন ও তার ৩/৪ জন সহযোগী ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে অপহরণ করতঃ অজ্ঞাত স্থানে নিয়া যায়। ভিকটিমকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে ভিকটিমের পরিবারকে সংবাদ দেয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার বিভিন্ন জায়গায় অনেক খোঁজাখুজি করেও অপহৃত ভিকটিমের কোনো সন্ধান পায়নি।
উক্ত ঘটনায় অপহৃত ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানায় একটি মামলা মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং-০৪, তারিখ ০১ মার্চ ২০২৪ইং, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত/০৩) এর ৭/৩০। মামলা রুজু হওয়ার পর কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানা পুলিশ জানতে পারে মামলার আসামি বখাটে শাহিন আলম ভিকটিমকে নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীতে অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে ভিকটিমের পরিবার ভিকটিমকে দ্রুত উদ্ধার এবং অপহরণকারী’কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার এবং আসামি’কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়াতদন্ত অব্যহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, উক্ত মামলার প্রধান আসামি মোঃ শাহিন আলম চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানাধীন লালখান বাজার এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭,চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ০৬ এপ্রিল ২০২৪ইং তারিখ আনুমানিক ১৩৩৫ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী মোঃ শাহিন আলম (২১), পিতা-ইউসুপ আলী, সাং-পূর্ব লম্বরীপাড়া, থানা-উখিয়া, জেলা-কক্সবাজার’কে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে সূত্রে বর্ণিত মামলার পলাতক আসামি এবং অপহরণ করার কথা নিজে অকপটে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, মামলা রুজু হওয়ার পর আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত