ভ্রাতৃত্বের টানে ক্যাম্পাসে সম্প্রীতির ইফতার
নোবিপ্রবি প্রতিনিধি: মিরাজ মাহমুদ
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন আসলেই খুবই রোমাঞ্চকর। শত অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয় এই সময়ের মাঝে। পরিবারের পিছুটান ফেলে বিশ্ববিদ্যালয়েই ব্যাস্ত সময় পার করছে হাজারো শিক্ষার্থী। এলো সম্প্রতি, সহানুভূতির মহিমা নিয়ে পবিত্র মাহে রমজান। প্রতিটি ঘরে ঘরে শুরু হবে রমজানের ধুম প্রস্তুতির আমেজ। রমজানে নিজ বাড়িতে পরিবার ও স্বজনদের নিয়ে ইফতার করতে কে না পছন্দ করে।
তবে এই রমজান ও বুঝি পরিবার ছাড়াই শুরু করতে হবে।
ইশ!!
যদি এবারের রমজান টা পরিবারের সাথে কাটানো যেত । কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাসের টাইট সিডিউল, এসাইনমেন্ট, ল্যাব, প্রেজেন্টেশন ও ভাইবার সেই ব্যাস্তময় রুটিনের যাঁতাকলে যেন কোনভাবেই বাড়িতে যাওয়ার ফুসরত পাওয়া যাচ্ছে না, সাথে টিউশনির চাপ তো আছেই। সব মিলিয়ে রমজানের অধিকাংশ ইফতার ক্যাম্পাস আর মেসেই সম্পন্ন করতে হবে এসব শিক্ষার্থীদের। পরিবারের সাথে একসাথে বসে ইফতার করার সেই আনন্দঘন মূহুর্ত পাওয়া হবে না এবারও।
আর তাইতো পরিবার ছাড়া ইফতারের এমন বেদনা ভুলতেই ক্যাম্পাসের জুনিয়র – সিনিয়র সবাই মিলেমিশে একসাথে মেতে উঠে সম্মিলিত ইফতার আয়োজনে একটি পরিবারের মতোই। সবাই হাত বাড়িয়ে সহযোগিতা করছে ইফতার প্রস্তুতিতে। কেউ বা শরবত বানানোতে ব্যাস্ত, কেউ বা সালাত কাটতে, কেউ কেউ সাজিয়ে দিচ্ছে ইফতার ভাগে ভাগে।
আর এমন আয়োজনে শামীল হচ্ছেন অভিভাবকতূল্য শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ ও।
সকলের উপস্থিতি মধুময় করে তোলে এই আয়োজনকে। যেন সবাই একই পরিবারের কেউ।
পরিবারের মতোই এ যেন আরো এক পরিবার। সকল শিক্ষার্থী রা যেন একটি পরিবারের অংশ।
সারা দিন রোজা রেখে ইফতারের আনন্দময় ক্ষণটি প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে কাটাতে ক্যাম্পাসে ইফতারের আসর বসান নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আর এই ইফতারের ছোট বড় আসরে মুখরিত হয়ে উঠছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান।
নোবিপ্রবি কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, শহীদ মিনার প্রাঙ্গন, রুমীভবন সহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে গোল হয়ে, একই কাতারে বসে সকল ধর্ম- বর্ণ ও সকল ধরনের শিক্ষার্থীরা একসাথে ইফতার আয়োজনে মেতে উঠে। নেই কোন ভেদাভেদ, নেই কোন বৈষম্য, নেই কোন ধর্মীয় সীমাবদ্ধতার বলাই। ইসলামের এক সৌন্দর্য্যধারক ঐতিহ্য বহন করে এমন সম্মিলিত ইফতার আয়োজন। এ যেন সহযোগিতা, সহমর্মিতা ও সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ।
ডিপার্টমেন্ট, বিভিন্ন সংগঠন, এসোসিয়েশনগুলো তে একের পর এক ইফতার আয়োজন চলতেই থাকে।আর এভাবেই প্রাণোচ্ছল থাকে ক্যাম্পাস।
ক্যাম্পাসে সবার সাথে একসাথে ইফতারের অনুভূতি জানিয়ে অনন্যা দাশ বলেন: সবার সাথে একসাথে বসে ইফতার করার মধ্যে যে আনন্দ সেটা আসলেই অসাধারণ একটা অনুভুতি । ভিন্ন ধর্মের হয়েও এমন আয়োজনে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে অংশগ্রহণ করি। এই আয়োজন গুলোই আমাদের ক্যাম্পাসকে মুখোরিত করে রাখে।এ যেন ভাতৃত্ববোধের এক অনন্য দৃষ্টান্ত।