ময়মনসিংহের ফুলপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ভিকটিম ওয়াজেদ আলী ওরফে গেনু মিঞা‘কে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলার পলাতক আসামী এমরান মাসুদ(২৫) ও ফুল মাহমুদ ওরপে ফুইল্যা(৫৫) দ্বয়‘কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ।
র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষ ভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন হত্যা সংক্রান্ত অপরাধ কর্মকান্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে হত্যার মত জঘন্য কাজ থেকে সমাজ তথা দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, ময়মনসিংহের ফুলপুর থানাধীন ছনধরা দক্ষিনপাড়া গ্রামস্থ বাদী ও বিবাদীরা পরস্পর বসবাস করতঃ এবং তাদের মধ্যে প্রায় সময় জমি সংক্রান্তে বিরোধ লেগেই থাকতো। ঘটনার দিন ইং ১৬/০২/২০২৪খ্রি. তারিখ সকাল অনুমান ১১.০০ ঘটিকায় আসামি এমরান মাসুদ(২৫) ও ফুল মাহমুদ ওরফে ফুইল্যা(৫৫)‘সহ এজাহারনামীয় ১০ জন আসামি ও অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন আসামি হাতে দা, লোহার রড, সুরকিও লাঠি নিয়ে সাক্ষী মালেকা খাতুন(৪২) ও অজুফা খাতুন(৭৫)দ্বয়ের সাথে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে এলোপাথারি মারপিঠ করিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। ঘটনা দেখিয়া ভিকটিম ওয়াজেদ আলী ওরফে গেনু মিঞা বাঁধা দিলে আসামিগন ভিকটিমের মাথায়, হাতে, পিঠে কোপ মারিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। সাক্ষীগণের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে চলে যায়। ঘটনার পর, ভিকটিম ওয়াজেদ আলী ওরফে গেনু মিঞা, জখমী মালেকা খাতুন(৪২) ও অজুফা খাতুন(৭৫)দেরকে চিকিৎসার জন্য ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। রেফার্ড মতে, ভিকটিম ওয়াজেদ আলী ওরফে গেনু মিঞা, জখমী মালেকা খাতুন ও অজুফা খাতুন‘দেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসা শেষে ভিকটিম ওয়াজেদ আলী ওরফে গেনু মিঞা এবং জখমীদ্বয় বাড়ীতে চলে যান।
এখানে আরো উল্লেখ্য যে, ভিকটিম ওয়াজেদ আলী ওরফে গেনু মিঞা হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ীতে যাওয়ার পর গত ০৩/০৩/২০২৪ খ্রি. তারিখে রাত্রীবেলা মাথায় আঘাতের কারনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং রাত অনুমান ১১.০৫ ঘটিকার সময় তার নিজ বাড়ীতেই মৃত্যুবরণ করেন। ভিকটিম ওয়াজেদ আলী ওরফে গেনু মিঞা‘কে হত্যার ঘটনায় ময়মনসিংহের ফুলপুর থানা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান (৩২), পিতা-মৃত ওয়াজেদ আলী ওরফে গেনু মিঞা (ভিকটিম), সাং-ছনধরা দক্ষিনপাড়া, থানা-ফুলপুর, জেলা-ময়মনসিংহ এজাহারনামীয় ১০ জন‘সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জন‘কে আসামী করে ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যাহার মামলা নং-০৫, তারিখঃ ০৪/০৩/২০২৪খ্রি., ধারাঃ ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/১১৪/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলার পর থেকে আসামিরা গা ঢাকা দিয়ে পলাতক ছিল।
এরই প্রেক্ষিতে, বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে অধিনায়ক র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ মহোদয়ের নির্দেশক্রমে র্যাব-১৪, সদর ব্যাটালিয়নের অপারেশনস্ অফিসার উপ-পরিচালক মোঃ আনোয়ার হোসেন এর নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল ইং ১২/০৩/২০২৪ ইং তারিখ ভোর অনুমান ০৪.০০ ঘটিকায় ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানাধীন জিলকি গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে হত্যা মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি ১। এমরান মাসুদ(২৫), পিতা-মৃত আহাম্মদ আলী, ২। ফুল মাহমুদ ওরফে ফুইল্যা(৫৫), পিতা-মৃত সদর আলী, উভয় সাং-ছনধরা দক্ষিনপাড়া, থানা-ফুলপুর, জেলা-ময়মনসিংহ‘দ্বয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
ধৃত আসামি‘দ্বয়কে ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতেও র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।