প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ১১:৫৩ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪, ১২:৫০ অপরাহ্ণ
অবৈধভাবে চোরাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশে ভোগ্যপণ্য পাচারকালে
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে অবৈধভাবে চোরাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশে ভোগ্যপণ্য পাচারকালে কক্সবাজারের সদর থানাধীন টেকপাড়াস্থ মাঝেরঘাট এলাকা থেকে তিনজন পাচারকারী র্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার; বিপুল পরিমাণ ভোগ্যপণ্য সয়াবিন তেল, আটা, রসুন ও চিনি উদ্ধার
১। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশে বিবিধ অপরাধ নির্মূলে প্রতিনিয়ত অবদান রেখে চলেছে। ‘‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’’ এই স্লোগান নিয়ে র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, জঙ্গী দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, জলদস্যু, ডাকাত, চুরি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদকসহ দেশে বিরাজমান নানাবিধ অপরাধ দমনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
২। সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারের সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও পাচারকারী বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য, জ্বালানী তৈল ও ডিজেল অবৈধভাবে চোরাচাইপথে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করছে। এতে করে একদিকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। একই সাথে দেশীয় উপরোল্লিখিত খাদ্যদ্রব্য, অকটেন, ডিজেল ইত্যাদি দেশ হতে অন্য দেশে পাচার হওয়ার কারণে দেশে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাচারের বিষয়টি র্যাবের নজরে আসায় এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার এবং পাচার রোধে র্যাব-১৫, কক্সবাজার প্রতিনিয়ত র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও তৎপর রয়েছে।
৩। জানুয়ারি ২০২৪ হতে অদ্যাবধি পর্যন্ত অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার রোধে র্যাব-১৫, কক্সবাজার কর্তৃক পরিচালিত অভিযানে সর্বমোট ১৬ জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। একই সাথে তাদের হেফাজত হতে উদ্ধার করা হয় সর্বমোট ৭,০৮৫ লিটার অকটেন, ৪,৪৭০ লিটার ভোজ্য তেল সয়াবিন, বিভিন্ন প্রকারের ১,৩৬,৫৫০ পিস ঔষধ, ৫০০ কেজি ময়দা, ৪০ কেজি পেঁয়াজ, ৩১ কেজি রসুন, ৩৬ কেজি আদা উদ্ধার এবং পরিবহন কাজে ব্যবহৃত ০২টি পিকআপ, ০১টি ড্রাম্পার গাড়ি ও ০১টি মোটর সাইকেল, নগদ ১৮,১০০/- টাকা জব্দ করা হয়।
৪। এ ধরণের গর্হিত অপরাধ রোধকল্পে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫ জানতে পারে যে, সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে অন্য দেশে পাচারের উদ্দেশ্যে কতিপয় পাচারকারী ভোজ্য তেল সয়াবিন’সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য নিয়ে কক্সবাজার জেলার সদর থানাধীন কক্সবাজার পৌরসভার ০৪নং ওয়ার্ডের টেকপাড়াস্থ মাঝেরঘাট এলাকার খুরুশকুল ব্রীজের দক্ষিণ পাশে অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ রাত অনুমান ২৩.১০ ঘটিকার সময় র্যাব-১৫, সিপিএসসি, কক্সবাজার ক্যাম্পের চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় র্যাবের আভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে দিকবিদিক কৌশলে পলায়নের চেষ্টাকালে তিনজন পাচারকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত পাচারকারীরা তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশসহ পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের উদ্দেশ্যে উক্ত স্থানে ভোজ্য তেল সয়াবিন, আটা, রসুন ও চিনি মজুদ করছে মর্মে স্বীকার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত পাচারকারীদের হেফাজত হতে সর্বমোট ৫৩টি বস্তায় ২,১২০ লিটার ভোজ্য সয়াবিন তেল, ১৭টি বস্তায় ৮৫০ কেজি আটা (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে), ১৫টি বস্তায় ৭৫০ কেজি চিনি (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে) এবং ১২টি বস্তায় ৪৮০ কেজি রসুন (প্রতি বস্তায় ৪০ কেজি করে) উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৬,০০,০০০/- (ছয় লক্ষ টাকা)।
৫। গ্রেফতারকৃত পাচারকারীদের বিস্তারিত পরিচয় :
১) কবির আহমদ (৫৩), পিতা-মৃত আব্দুর রহমান, সাং-কাহারঘোনা, ৪নং ওয়ার্ড, সরল ইউনিয়ন, থানা-বাঁশখালী, জেলা-চট্টগ্রাম।
২) আবু তাহের (৫০), পিতা-মৃত হাসন আলী, সাং-কুতুবজোম, ৪নং ওয়ার্ড, মহেশখালী পৌরসভা, থানা-মহেশখালী, জেলা-কক্সবাজার।
৩) মোঃ তৈয়ব (২৪), পিতা-মৃত শরীফ, সাং-সুতাতলী, ৩নং ওয়ার্ড, টেকনাফ সদর ইউনিয়ন, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার।
৬। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায় যে, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ এই পাচারের সাথে জড়িত। সাম্প্রতিক সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশে যুদ্ধাবস্থার কারণে দেশটিতে তৈল, ঔষধ ও খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যাপক ঘাটতি এবং দ্রব্যমূল্যের প্রচন্ড উর্ধ্বগতি হওয়ায় গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর-পরস্পরের সহযোগীতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানী ও ডিলারদের নিকট থেকে পাইকারি দামে ভোজ্য তৈল, রসুন, আটা এবং চিনিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয় করে প্রাথমিক পর্যায়ে নিজেদের হেফাজতে মজুদ করতো। পরবর্তীতে তারা আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হওয়ার জন্য কম মূল্যে ক্রয় ও মজুদকৃত পণ্য সামগ্রী উচ্চ দামে কক্সবাজার জেলার সমুদ্রের বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করে আসছিল বলে জানা যায়।
৭। গ্রেফতারকৃত পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।