দীর্ঘ ১৩ বছর পর শেরপুরের নকলা থানাধীন বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর নাবালিকা আকলিমা খাতুন(০৪)কে অপহরণ করতঃ মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোছাঃ তাসলিমা’কে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানাধীন বাস ষ্ট্যান্ড এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্প।*
বাংলাদেশের মানুষের কাছে আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। বিভিন্ন ধরনের চাঞ্চল্যকর অপরাধের স্বরূপ উৎঘাটন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার কারণেই এই প্রতিষ্ঠান মানুষের কাছে আস্থা ও নিরাপত্তার অন্যন্য নাম হিসেবে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছে।
র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, মানব-পাচার, হত্যাসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে; যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, ভিকটিম আকলিমা খাতুন (০৪) শেরপুর জেলার নকলা থানাধীন শালখা গ্রামের মোঃ আব্দুল জলিল এর কন্যা। উক্ত মামলার বিবাদী মোছাঃ তাছলিমা খাতুন (২৫), স্বামী-হোসেন আলী, সাং-পাঁচকাহনিয়া, থানা-নকলা, জেলা-শেরপুর মামলার বাদী মোঃ আব্দুল জলিল (৩০), পিতা-মোঃ লেসু মিয়া, সাং-শালখা, থানা-নকলা, জেলা-শেরপুর এর মামাতো বোনের সতিন। আসামি বাদীর আত্মীয় হওয়ার সুবাদে সে প্রায়ই বাদীর বাড়িতে যাতায়াত করত। ঘটনার ২ দিন পূর্বে অর্থাৎ ০৯/১০/২০১১ ইং তারিখে আসামি মোছাঃ তাসলিমা বাদীর বাড়িতে বেড়াতে আসে।
ঘটনার দিন ১২/১০/২০১১ ইং তারিখ আসামি মোছাঃ তাছলিমা খাতুন বাদীর নাবালিকা মেয়ে আকলিমা খাতুন (০৪) কে নিয়ে বাড়ির আশেপাশে ঘুরতে বের হয়ে ৪/৫ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও আসামিসহ ভিকটিম বাড়িতে ফিরে না আসায় বিবাদীর স্বামী মোঃ হোসেন আলীকে ফোন দিলে সে জানায় তার মেয়েকে অপহরন করে কাঁচপুর ব্রীজ এলাকায় আছে। তাকে নিতে হলে ১লক্ষ টাকা দিতে হবে। টাকার জন্য বারংবার তাগিদ দিতে থাকে। যদি টাকা দেওয়া না হয় তাহলে ভিকটিমকে দেশের বাহিরে পাচার করে দেওয়া হবে বলে হুমকি প্রদান করে।
উক্ত বিষয়ে ভিকটিমের বাবা মোঃ আব্দুল জলিল বাদী হয়ে শেরপুর জেলার নকলা থানায় এজাহার দাখিল করিলে থানার অফিসার ইনচার্জ, নকলা থানার মামলা নং-০১/১৪২; তারিখ-০১/১১/২০১১ খ্রি. জিআর নং-১৪২/১১, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন ও দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০০৩ এর ৭/৮ রুজুু করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে উক্ত মামলার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ বিচার কার্যক্রম শেষে উক্ত আসামি মোছাঃ তাসলিমা’কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ০৭ ধারায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১০,০০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ০৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ০৮ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ২০,০০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ০১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন।
এরই পেক্ষিতে, বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে আসামীর অবস্থান নিশ্চিত করে র্যাব-৭, সিপিসি-২, হাটহাজারী ক্যাম্প, চট্টগ্রাম এর ফ্লাইট লেঃ মোঃ সাইফুল্লাহ ও র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোঃ আবরার ফয়সাল সাদী এর নেতৃত্বে গোপণ সংবাদের ভিত্তিতে উক্ত মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মোছাঃ তাসলিমা এর অবস্থান জানতে পারলে র্যাবের একটি চৌকস আভিযানিক দল গোপণ নজরদারির মাধ্যমে ইং ২২/০২/২০২৪খ্রি. তারিখ দুপুর ১২.৫০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী বাস ষ্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মোছাঃ তাসলিমা’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
ধৃত আসামীকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে শেরপুর জেলার নকলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।