শৈলকুপায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুল ফাঁকি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ধুলিয়াপাড়া শশীচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ, স্কুল ফাঁকি দেওয়া এবং মহান ভাষার মাসে স্কুল বন্ধ রেখে পতাকা উত্তোলন না করার অভিযোগ। জানা গেছে, শৈলকুপা উপজেলার ৫ নং কাঁচেরখোল ইউনিয়নের ১২৯ নং ধুলিয়াপড়া শশীচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান বিদ্যালয় যোগদানের পর প্রতিষ্ঠানের একাধিক খাতের অর্থ আত্মসাৎ করেন। কমিটি ও শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং মাসের পর মাস স্কুল ফাঁকি দিয়ে আসছেন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১১ এবং ১২ ফেব্রুয়ারী পতাকা উত্তোলন না করে বিদ্যালয় বন্ধ। বিদ্যালয় বন্ধ দেখে মুঠো ফনে প্রধান শিক্ষককে কল করা হলে তিনি বলেন আমি বার্ষিক ক্রিয়া প্রতিযোগিতায় ছাত্র ছাত্রীদের অংশ গ্রহণের জন্য বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে আসছি তাই বিদ্যালয় বন্ধ ভূলে পতাকা উত্তোলন করতে পারনি। বিশেষ করে ২০১৮ থেকে ২০২২ অর্থ বছরের বিদ্যালয়ের উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য দুটি চেকের মাধম্যে ৮৪ হাজার টাকা উত্তোলনের জন্য সভাপতির কাছ থেকে কৌশলে সই করে নেন। সরকারি বরাদ্দের টাকা কোন কাজ না করেই অর্থ আত্মসাৎ করেন। নাম না প্রকাশের শর্তে স্কুলের শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষকের অসদাচরণে তাঁরা অতিষ্ঠ এবং তিনি ইচ্ছেমাফিক স্কুল করেন। সরকার নির্ধারিত সময়ের পরিবর্তে কখনো সকাল ১১ কিংবা দুপুর ১২ টায় স্কুলে আসেন আবার ২ টা না পেরুতেই স্কুল ত্যাগ করে চলে যান। ম্যানেজিং কমিটি কিংবা সহকর্মীরা কেউ এর প্রতিবাদ করলে কমিটির লোকজনদের হেয় প্রতিপন্ন এবং সহকর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করেন। ফলে এর ভয়ে ওইসব শিক্ষকরা মুখ খুলতে নারাজ। এবিষয়ে বিদ্যালের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে জানতে চায়লে তিনি বলেন আমি সভাপতি হয়েছি দুই বছর এর মধ্যে আমাকে একদিনের জন্য মিটিং কল করা হয়নি। আমি প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার প্রয়োজন না হলে মিটিং কল কেন করব। বিদ্যালয়ে অভিভাবক দের সাথে মাসিক কোন সভা করা হয় না। বিদ্যালয়টি তাঁর নিজ বাড়ি বানিয়ে চালাচ্ছেন। এতে করে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতি ঘটেছে ছাত্র-ছাত্রীদের অন্য বিদ্যালয়ে নিয়ে চলে জাচ্ছেন অভিভাবকরা। এ বিষয়ে স্থানীয় উপজেলা শিক্ষা অফিসে একাধিক বার মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে বলেন বিদ্যালের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও সভাপতি। শশীচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলু রহমান মুঠোফোনে বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য বিদ্যালয় বন্ধ করে রেখেছি ভূল করে পতাকা উত্তোলন করতে পারনি। অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ নিয়ে পরে কথা বলা যাবে। অবশ্য এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। শৈলকুপা উপজেলা শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি সবে মাত্র এসেছি এবিষয়ে কিছু জানি না।খেলা চলাকালীন স্কুল বন্ধ রেখে পতাকা উত্তোলনের ব্যাপারে জানতে চায়লে তিনি বলেন,স্কুল বন্ধ রেখে পতাকা উত্তোলন না করার কোন সুযোগ নাই। প্রধান শিক্ষকের অর্থ আত্মসাৎ এর ব্যাপারে তিনি বলেন আমি বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানলাম।এবিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে তদন্তপূর্বক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে যতদ্রুত সম্ভব তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।