ইউটিউবে শর্ট ফিল্ম তৈরী ও ভাইরাল হওয়ার প্রলোভনে বিকৃত যৌন নিপিড়নের মূলহোতা ইসমাইল হোসেন ওরফে স্বপন গ্রেফতার ও ৯জন ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে র্যাব
র্যাব জানিয়েছে, ইউটিউবে শর্ট ফিল্ম তৈরী ও ভাইরাল হওয়ার প্রলোভনে বিকৃত যৌন নিপিড়নের ঘটনার মূলহোতা ইসমাইল হোসেন ওরফে স্বপন গ্রেফতার ও ৯জন ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আপোষহীন ভাবে বিভিন্ন অপরাধ দমনে ও সন্ত্রাসমুক্ত দেশ গড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে র্যাব এ পর্যন্ত জঙ্গি, অপহরণকারী, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকচক্র, মাদক ব্যবসায়ী, এজাহারনামীয় আসামী, মলম/অজ্ঞান পার্টি, চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
ভিকটিম মোঃ কায়ছার হোসেন @ আলিফ (১৯), পিতা- মোঃ আলমগীর হোসেন, থানা- গৌরিপুর, জেলা- ময়মনসিংহ এ/পি সাং- মিরপুর-১০, এমআইএসটি কলেজ, আহমেদ নগর, মধ্যপাইকপাড়া, মিরপুর-১, পাম্পের গলি, বাসা নম্বর-১৩১ (স¤্রাট এর বাড়ির ভাড়াটিয়া)। আসামী মোঃ ইসমাইল হোসেন @ স্বপন (৩২), পিতা- মোঃ মোজাম্মেল হোসেন, মাতা- হোসনেয়া বেগম, বশিকপুর (নইমদ্দিন ভূইয়া বাড়ী), থানা- লক্ষীপুর সদর, জেলা- লক্ষীপুর এ/পি সাং-দেওয়ান বাড়ী, থানা- দক্ষিনখান, ডিএমপি, ঢাকা। ভিকটিম মোঃ কায়ছার হোসেন @ আলিফ ঢাকাস্থ মিরপুর-১০ এমআইএসটি কলেজে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার ডিপার্টমেন্ট তৃতীয় সেমিস্টার পড়ালেখা করে আসছিল।
ভিকটিম লেখাপড়া পাশাপাশি তার বন্ধুবান্ধবের সাথে বিভিন্ন ধরণের ভিডিও তৈরী করে ফেসবুকে আপলোড করতো। ভিকটিম এর বন্ধু সিদরাতুল মুনতাহা তামিম ধৃত আসামী মোঃ ইসমাইল হোসেন স্বপন সাথে পুরান ঢাকার সাকরাইন অনুষ্ঠানে ভিডিও করে ভিডিও আপলোড করলে ভিকটিম বর্ণিত ভিডিও দেখে ভিকটিমের ভালো লাগে। ভিকটিম তার বন্ধু তামিমকে জানায় এ ধরণের ভিডিও তৈরী করার জন্য জানালে ভিকটিম ধৃত আসামী সাথে পরিচয় হয়। ভিকটিম গত ২৫/০১/২০২৪ ইং তারিখ আনুমানিক ২১৩৭ ঘটিকার সময় ধৃত আসামীর মোবাইল ফোনে মেসেঞ্জারে তামিম এর বন্ধু পরিচয় দিয়ে ভিডিও তৈরী করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে মেসেজ দেয়।
পরে উক্ত আসামী গত ২৬/০১/২০২৪ ইং তারিখ ভিকটিমকে উত্তরা হাউজ বিল্ডিং ঢাকায় দেখা করতে বলে। ভিকটিম একই তারিখ রাত আনুমানিক ২২০০ ঘটিকার সময় উত্তরা হাউজ বিল্ডিং ঢাকায় তার সাথে দেখা করলে সে ভিকটিমকে রিক্সা যোগে ধৃত আসামী ডিএমপি ঢাকা দক্ষিণখান থানাধীন দেওয়ান বাড়ীস্থ জনৈক মাইন উদ্দিনের মালিকানাধীন ৭ম তলা ভবনের ৫ম তলার উত্তর পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া বাসায় নিয়ে যান। ভিকটিম রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ধৃত আসামীর কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরের দিন ২৭/০১/২০২৪ ইং তারিখ আনুমানিক ১১০০ ঘটিকার সময় ভিডিও করার জন্য ভিকটিম সহ ধৃত আসামী বের হয়। ভিডিও শেষে একই তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ১৯০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম সহ ধৃত আসামীর ভাড়াটিয়া বাসায় ফেরত যান। বাসায় যাওয়ার পর রাত আনুমানিক ২৩০০ ঘটিকায় সময় খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ভিকটিম সহ আসামী মোঃ ইসমাইল হোসেন @ স্বপন এর কক্ষে ঘুমাতে যায়।
ধৃত আসামী ভিকটিমের সাথে অস্বাভাবিক যৌন সঙ্গম করার জন্য দস্তাদস্তি শুরু করেন। ভিকটিম ধৃত আসামীকে বাধাঁ প্রদান করলে একপর্যায়ে ধৃত আসামী ভিকটিম মারধর করার হুমকী প্রদান করেন। পরবর্তীতে ২৮/০১/২০২৪ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ০১.৩০ ঘটিকার সময় আসামী মোঃ ইসমাইল হোসেন @ স্বপন ভিকটিমের পরনে থাকা টু-কোয়ার্টার প্যান্ট জোড়পূর্বক খুলিয়া ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পায়ু পথে সঙ্গম (অস্বাভাবিক যৌন সঙ্গম) করেন।
একপর্যায়ে ভিকটিম রাতেই বাসা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে বাসার দরজা তালা বদ্ধ থাকায় ভিকটিম বের হতে পারেনি। পরবর্তীতে ভিকটিম র্যাবের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সংবাদ দেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রি. বিকাল আনুমানিক ১৫.১৫ ঘটিকার সময় র্যাব-১, এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ডিএমপি ঢাকা দক্ষিণখান থানাধীন দেওয়ান বাড়ীস্থ জনৈক মাইন উদ্দিনের মালিকানাধীন ৭ম তলা ভবনের ৫ম তলার উত্তর পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া বাসায় অবস্থান করছে।
প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষণকারী আসামী মোঃ ইসমাইল হোসেন @ স্বপন (৩২), পিতা- মোঃ মোজাম্মেল হোসেন, থানা- লক্ষীপুর সদর, জেলা- লক্ষীপুর এ/পি সাং-দেওয়ান বাড়ী, থানা- দক্ষিনখান, ঢাকা’কে গ্রেফতার করে। এ সময় গ্রেফতারকৃত আসামীর নিকট হতে ০৯ জন ভিকটিম, ০১ প্যাকেট কনডম, ০১টি নেভী ব্লু ও সাদা রংয়ের বিছানার চাদর, ০১ টি হাফ প্যান্ট এবং ০২ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত