ধ*র্ষন মামলার বাদীকে পিটিয়ে হত্যাঃ নেত্রকোণার আটপাড়ায় ধ*র্ষণ মামলার বাদীকে পিটিয়ে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় মামলার মূলহোতা‘সহ ০৬(ছয়) জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪,ব্যাটালিয়ন সদর, ময়মনসিংহ।
র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধ*র্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষ ভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন হত্যা সংক্রান্ত অপরাধ কর্মকান্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে হত্যার মত জঘন্য কাজ থেকে সমাজ তথা দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, এজাহার পর্যালোচনা এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণার আটপাড়া থানাধীন তেলিগাতী ইউনিয়নের পালগাঁও গ্রামের ভিকটিম সেলিনা আক্তার ও তার স্বামীর সাথে আসামিদের দীর্ঘদিন যাবৎ মামলা মোকদ্দমা চলে আসতেছিল। ঘটনার কিছুদিন পূর্বে ভিকটিম সেলিনা আক্তার নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া থানায় বাদী হয়ে আসামি মাসুদ মিয়া(৩০) সহ ০৫ জনের বিরুদ্ধে একটি ধ*র্ষণ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৫(১২)২০২৩খ্রি., ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০, (সংশোধনী/২০২০) এর ৯(১)/৩০। উক্ত মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিরা ভিকটিম সেলিনা আক্তার এর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ঘটনার দিন ইং ০৩/০১/২০২৪খ্রি. তারিখ রাত্রী অনুমান ০১.১০ ঘটিকার সময় আসামিরা রামদা, কিরিচ, লোহার রড ও চাপাতি নিয়ে ভিকটিম সেলিনা আক্তার এর বাড়ীতে প্রবেশ করে এবং ঘরের দরজা লাথি মেরে ভেঙ্গে ভিকটিম সেলিনা আক্তার‘কে বাড়ীর উঠানে নিয়ে আসে।
সকল আসামিরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভিকটিম সেলিনা আক্তার এর মাথায়, বুকে ও পেটে এলোপাথারি আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। সংবাদ পেয়ে বাদী পুলিশের সহায়তায় রাত ০৪.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম সেলিনা আক্তারকে উদ্ধার করে প্রথমে আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখানে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাৎক্ষনিকভাবে ভিকটিম সেলিনা আক্তার‘কে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ঐদিন ভোরবেলা কর্তৃব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম সেলিনা আক্তার‘কে মৃত বলে ঘোষনা করেন। ভিকটিম সেলিনা আক্তার‘কে হত্যার ঘটনায় নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া থানা এলাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নিহতের ননদ বেদেনা আক্তার (৩৫), স্বামী- হাবিকুল, গ্রাম-যোগিরনগুয়া, থানা-আটপাড়া, জেলা-নেত্রকোণা গত ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রি. তারিখে এজাহারনামীয় ১০ জন‘সহ অজ্ঞাতনামা আরো ০৪/০৫ জন‘কে আসামী করে নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং-০৬, তারিখঃ ০৮/০১/২০২৪খ্রি., ধারাঃ ৩০২/১১৪/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। উক্ত ঘটনার পর থেকে আসামিরা তাদের নিজ বাড়ি ত্যাগ করে গা ঢাকা দিয়ে ছদ্মবেশে পলাতক ছিল।
এরই প্রেক্ষিতে, বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে অধিনায়ক র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ মহোদয়ের নির্দেশক্রমে র্যাব-১৪, সদর ব্যাটালিয়নের অপারেশনস্ অফিসার উপ-পরিচালক মোঃ আনোয়ার হোসেন এর নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল ইং ২৩/০১/২০২৪ তারিখ সন্ধা অনুমান ১৯.০০ ঘটিকা হতে ২৩.৫০ ঘটিকা পর্যন্ত বিভিন্ন সময় টঙ্গি সহ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় র্যাব-১ এর সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যা মামলার আসামি ১। মোঃ নুরুল হক (৩৮), ২। মোঃ সম্রাট মিয়া (৫০), ৩। সামছুল হক (৪৫), সকলের পিতা-মৃত চান মিয়া ফকির, ৪। মোঃ মাসুদ মিয়া (৩০), পিতা-কালাম উদ্দিন মুন্সী, ৫। মোঃ হিমন মিয়া (৩০), পিতা-মৃত গিয়াস উদ্দিন, ৬। মোঃ রোকন মিয়া (৩০), পিতা-মৃত নুর মিয়া, সর্ব সাং-পালগাঁও, থানা-আটপাড়া, জেলা-নেত্রকোণা'দেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ কর্তৃক গত ইং ২১/০১/২০২৪ ইং তারিখ এই মামলার আসামি ১। মোঃ অসীম (২৫), ২। মোঃ রাজু মিয়া (২৩), উভয় পিতা-শাহ জাহান, সাং-পালগাঁও, থানা-আটপাড়া, জেলা-নেত্রকোণা'দেরকে গ্রেফতার করে নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতেও র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত