গাংনীতে প্রধান শিক্ষককে পেটালেন ছাত্রীর পিতা ও ভাই
ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এনামুল হক নামে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে বিদ্যালয়ের ছাত্রীর পিতা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। সোমবার বেলা ১১ টার দিকে ছাত্রীর নিজ বাড়ির পাশে পাকা সড়কের উপর এ ঘটনা ঘটে। ওই শিক্ষক মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের শালদহ গ্রামে অবস্থিত এসএআরবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত আছেন।
স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২১ জানুয়ারী) দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক ছাত্রীকে তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে সার্বিক সহযোগিতার প্রলোভন দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেয় এবং তার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার চায়। পরে প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণে ওই ছাত্রী পরিবারের লোকজনকে জানালে তার পিতা ও পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
এ ঘটনার পরের দিন সোমবার বেলা ১১ টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাত্রীর বাড়ির পাশ দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় তার মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে ছাত্রীর পিতা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। ঘটনাটি এলাকার লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানান।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা জানান, রোববার দুপুরে এনামুল হক স্যার আমার মেয়েকে অফিসে ডেকে কুপ্রস্তাব দেয় এবং তার ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার চায়। এতে ভয় পেয়ে আমার মেয়ে বিষয়টি আমাকে খুলে বলে। একজন শিক্ষক এমন আচরণ করবে তা আমি কখনই ভাবিনি। আমার মেয়েকে ওই স্কুলে আর পাঠাবো না এবং আমরা এই শিক্ষকের বিচারের দাবি জানাচ্ছি। ছাত্রীর ভাই জানান, এর আগেও তিনি একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন। ফলে অনেক ছাত্রী এই বিদ্যালয় ছেড়ে অন্য বিদ্যালয়ে গিয়ে ভর্তি হয়েছে।
এই শিক্ষকের বিচার দাবি করেন তিনি। জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক এনামুল হক বলেন, আমি নির্দোষ। কে বা কারা বিশেষ উদ্দেশ্য ও স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আমার বিরুদ্ধে দফায় দফায় এমন কুৎসা রটনা করে চলেছেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সাকলায়েন সেপু জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারী) ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের বসার কথা রয়েছে। মিটিং শেষে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারী ও হিজলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান মনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু শুনি নাই। প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে দোষী প্রমাণিত হলে তার অবশ্যই বিচার হোক সেটা আমি চাই।
সেই সাথে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বা তার পরিবারের পক্ষ বা প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে লিখিত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রীতম সাহা জানান, বিষয়টি প্রথম শুনলাম। ভুক্তভোগী ছাত্রী বা তার পরিবারের পক্ষ বা প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকেও কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন……………..