র্যাব ফোর্সেস প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, গণ-মানুষের নিরাপত্তা বিধান ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জনগণের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে এ বাহিনী মাদক, অস্ত্র, জঙ্গিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে ইতোমধ্যে জনমনে সুদৃঢ় অবস্থান তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। অপরাধ দমনে র্যাব শুধু আভিযানিক প্রক্রিয়ায় সীমাবদ্ধ থাকেনি। ইতোপূর্বে যে সকল জঙ্গি ও জলদস্যুরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে অন্ধকার জীবন থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চেয়েছে তাদের আত্মসমর্পণ, পুনর্বাসন ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে র্যাব।
ঝিনাইদহ জেলার সদর থানাধীন হামদহ ঘোষপাড়া এলাকায় বসবাসকারী ভিকটিম বরুন কুমার ঘোষের সাথে আসামি তন্ময় হোসেন (২৩), পিতা- মোঃ বুলু জোয়ার্দার, সাং-টিবলেপাড়া,থানা- ঝিনাইদহ সদর, জেলা-ঝিনাইদহ সহ আরো কয়েকজন আসামির সাথে জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
উক্ত বিরোধের জের ধরে আসামিরা ভিকটিম ও তার পরিবারের লোকজনকে খুন-জখমের হুমকি দিয়ে আসছিল। গত ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক সন্ধ্যা ০৭.০০ ঘটিকায় ভিকটিম বরুন কুমার ঘোষ ইজিবাইক সহযোগে ভিসার কাজে বাইরে গেলে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানাধীন হামদহ শেখপাড়া এলাকায় পৌছা মাত্র পূর্ব হতে ওত পেতে থাকা এজাহার ভুক্ত ০৯ জন আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৯-১০ জন আসামি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বে-আইনী দলবদ্ধ হয়ে ভিকটিম বরুন কুমার ঘোষ’কে ইজিবাইক থেকে নামিয়ে রাম-দা, চাপাতি, ডাসা, লোহার রড দিয়ে এলোাপাথারি ভাবে কোপাতে ও আঘাত করতে থাকে।
আসামিরা ভিকটিমের মাথা লক্ষ্য করে কোপ মারে এবং প্রচন্ড কোপাকোপির ফলে ভিকটিমের আঙ্গুল,ডান হাতের কব্জি ও বাম পা হাটু থেকে সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনার একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। অতঃপর স্থানীয় লোকজন ভিকটিম বরুনকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
উক্ত ঘটনায় মৃত বরুনের স্ত্রী টুম্পা রানী ঘোষ বাদী হয়ে ঝিনাইদহ জেলার ঝিনাইদহ সদর থানায় চাঞ্চল্যকর বরুন কুমার ঘোষ হত্যাকাণ্ডে জড়িত এজাহারভুক্ত ০৯ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৯/১০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-১৯, তাং-১০/০১/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ দন্ড বিধি। উক্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রাপ্ত পলাতক প্রধান আসামি তন্ময় হোসেন’কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অধিনায়ক র্যাব-১০ বরাবর একটি অধিযাচনপত্র প্রেরণ করেন। উক্ত অধিযাচন পত্রের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল চাঞ্চল্যকর বরুন হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২১ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক রাত ০৮:৪০ ঘটিকায় র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন উত্তর যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে উল্লেখিত ঝিনাইদহ জেলার সদর এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চাঞ্চল্যকর বরুন হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত পলাতক আসামি তন্ময় হোসেন (২৩), পিতা- মোঃ বুলু জোয়ার্দার, সাং-টিবলেপাড়া,থানা- ঝিনাইদহ সদর, জেলা-ঝিনাইদহ’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত