বাগেরহাটে আলোড়ন সৃষ্টিকারী দুই তরুনীকে আটকে রেখে গণধ*র্ষণ মামলার অন্যতম প্রধান আসামীকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬।
র্যাব ফোর্সেস আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে তরান্বিত করতে এবং সন্মানিত নাগরিকদের জন্য টেকসই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনের আলোকে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগনের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখ বিকালে ভিকটিম দুই তরুণী তাঁদের চাচাতো ভাই ও তার বন্ধুর সাথে দুটি মোটরসাইকেল যোগে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় ঘুরতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে অনুমান রাত ১১.০০ ঘটিকার দিকে চা পানের জন্য তারা বাগেরহাট শহরতলির হজরত খানজাহান (রহ.)-এর মাজার মোড়ে যান। মাজার এলাকা থেকে রাতে তারা খুলনার দিকে রওনা দেন। পরে ফকিরহাটের জারিয়া চৌমাথা এলাকায় গতিরোধক অতিক্রম করার সময় ছাত্রলীগ নেতা শাকিল সরদার এক তরুণীর ওড়না টেনে ধরেন। এতে ভিকটিম ও তার বন্ধু মোটরসাইকেল থেকে রাস্তার ওপর পড়ে যান। বিষয়টি দেখতে পেয়ে অন্য মোটরসাইকেলে থাকা ভিকটিমের চাচাতো ভাই ও অপর তরুণী মোটরসাইকেল থেকে নেমে যান। মোটরসাইকেল থেকে নামার পর কোনো কিছু জানতে চাওয়ার আগেই আসামী শাকিল ও মেহেদী তাদের মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে আসামী শাকিলে এক তরুণীকে প্রথমে স্থানীয় একটি চায়ের দোকানের বেঞ্চের উপর এবং আসামী মেহেদী অপর ভিকটিম তরুণীকে আধাপাকা টিন সেড দোকানের পিছনে বাগানে নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক ধ*র্ষণ করে। পরবর্তীতে রাত ০৩:২০ ঘটিকায় দ্বিতীয় দফায় আসামী মেহেদী ভিকটিম তরুণীকে চায়ের দোকানের বেঞ্চের উপর এবং তৃতীয় দফায় আসামী শাকিল অপর তরুণীকে জাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে আটকে রেখে ধ*র্ষণ করেন । এ সময় আসামী শাকিল ও মেহেদী বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছে থাকা টাকা এবং স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেন। আসামীদ্বয় ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দিয়ে ভিকটিমের বন্ধুসহ তাদেরকে ছেড়ে দেয়। এ বিষয়ে ভিকটিম তরুণী বাদী হয়ে উক্ত জঘন্য ও নিকৃষ্ট কর্মকান্ডের সাথে জড়িত আসামীদের বিরুদ্ধে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানায় গণধ*র্ষণের মামলা দায়ের করে। এমন নেক্কারজনক, জঘন্য ও ঘৃণিত গণধ*র্ষণের বিষয়টি বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) খুলনার একটি আভিযানিক দল ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণের সাথে জড়িত আসামীদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৬, (সদর কোম্পানি) খুলনা ক্যাম্পের একটি চৌকস আভিযানিক দল মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গত ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখ রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন ভাটিয়াপাড়া গোলচত্তর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ মামলার অন্যতম প্রধান আসামী (ক) মেহেদী হাসান (২০) কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত আসামী গণধর্ষণ এর সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।