“বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
সারাদেশে কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যার মধ্যে ফেনী জেলা অন্যতম। বিভিন্ন জনের ছত্রছায়ায় নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরণও পাল্টে যাচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে খুন সহ নানা অপরাধে কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসা ও দখলবাজিতেও তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। নানা অপরাধে জড়িয়ে কিশোররা ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ফেনী জেলাতে বিভিন্ন নামের কিশোর গ্যাং গ্রুপ কর্তৃক আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই, মাদক ব্যবসা রোধ এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় দৃষ্কৃতিকারী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফেনী জেলার সার্কিট হাউজ এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ০২ জুন ২০২৪ ইং তারিখ আনুমানিক ২০১৫ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে “PK” নামক কিশোর গ্যাং গ্রুপের প্রধান, আসামি ১। মোঃ সোহেল (২০), পিতা- মৃত রুহুল আমিন, সাং-আহম্মদপুর, থানা- সোনাগাজী, ২। মোঃ ইয়াসিন (২০), পিতা- বেলাল হোসেন, সাং-দক্ষিন কাশিমপুর, থানা-ফেনী সদর, উভয় জেলা-ফেনী এবং ৩। মোঃ বেলাল উদ্দিন, পিতা-ফজলুল হক, সাং-পুর্বচরবাটা, থানা- সুবর্ণচর, জেলা-নোয়াখালীদের আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিদের দেহ তল্লাশি করে তাদের নিজ হাতে বের করে দেয়া মতে ০২ টি ধারালো স্টিলের চাকু উদ্ধার সহ তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আরোও জানা যায় যে, তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ ফেনী রেলস্টেশন এবং সার্কিট হাউজ এলাকায় স্থানীয়ভাবে রাস্তায় সংঘবদ্ধ হয়ে মারামারি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি এবং এলাকায় প্রভাব বিস্তার সহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। “PK” কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা ফেনী জেলার রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড এবং সার্কিট হাউজ এলাকা সহ বিভিন্ন গলি ও রাস্তায় ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি সহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন এবং মাদক সেবন করে বলে জানা যায়। এছাড়াও তারা সাধারণ মানুষ সহ দৈনন্দিন চলাচলরত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভীতি প্রদর্শন এর মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনতাই করে আসছিল বলে অকপটে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামি ও উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাদেরকে ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।