বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
আট দিন পেরিয়ে গেলেও বিচার পায়নি আস্তে কথা বলার অনুরোধ করায় সিনিয়রের ইটের আঘাতে আহত হওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কৃষি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সঞ্জয় দাস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান গত ১৪ মে দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে বিদ্যুৎ না থাকায় অনেকের মতো লাইব্রেরীর পাশের টিন সেটের ঘরগুলোর বারান্দায় বসে সঞ্জয় দাস পড়ছিল। সেখানে একটা ছেলে আরেকটা মেয়ে উচ্চস্বরে কথা বলতে থাকায় সবার অসুবিধা হওয়ায় সঞ্জয় দাস উক্ত আপুকে আস্তে কথা বলার জন্য অনুরোধ করে এতে পাশে থাকা ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ মোল্লা তার দিকে তেরে আসে এবং গালাগালি শুরু করে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মাসুদ মোল্লা সঞ্জয় দাসের উপর ইট দ্বারা আঘাত করেন।
তিনি তখন জ্ঞান হারায়। পরে তার সঙ্গী সাথীরা উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করান।পরবর্তীতে অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাত ভর্তি করা হয়। চোখের উপরে কেটে যাওয়ায় পাঁচটি সেলাই লাগে।
এই বিষয়ে আহত শিক্ষার্থী সঞ্জয় দাস বলেন,”আমার চোখের অবস্থা খুবই মারাত্নক, সারারাত ব্যাথাতে ঘুমাতে পারছি না। চোখ চুলকায় যন্ত্রণাতে ছটফট করি। আগে ডান চোখ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছিলো দেখতে পারছিলাম না, তবে এখন চোখের ফোলাটা কিছুটা কমলেও, চোখে এখনো কালশিরা পড়ে আছে। চোখের ভিতরে ব্লাড জমে আছে। আমি চোখে ঝাপসা দেখি। ডাক্তার বলছে দুই- তিনমাস পরে এই ফোলা পুরাপুরি কমলে আবার পরীক্ষা করে দেখবে ভিতরে কোনো প্রবলেম আছে কিনা।
প্রশাসন থেকে এখনো কোনো রায় দেয়নি। তদন্ত কমিটি গতকালকেও (১৯ মে, রবিবার) ডেকেছিলেন, আমার কথা শুনেছেন। আবার আজকে (২০ মে, সোমবার) ডেকেছিলেন, সব ঘটনা শুনেছেন এবং প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর বক্তব্য নিয়েছেন। তারপর, আজকে বলতেছেন আবার ডাকা হবে বৃহস্পতিবার বা রবিবার। এভাবে প্রশাসন কালক্ষেপণ করতেছে আমার সাথে। প্রশাসনও আমাকে বিচার দিতে হয়রানি করাচ্ছে। আমি জানি না আদেও আমি ন্যায্য বিচার পাব কিনা। ”
তিনি আরো বলেন, “এমতাবস্থায় আমার দাবি হচ্ছে, প্রশাসন যেন আমার চোখ পুরাপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমার চিকিৎসা খরচের দায়ভার নেয় এবং কালক্ষেপণ না করে দ্রুত যেন আমার উপর অতর্কিতভাবে হামলাকরী সন্ত্রাসী মাসুদ মোল্লার যেন আজীবন ছাত্রত্ব বাতিল ও স্থায়ীভাবে বহি:ষ্কার করা হয়। এটা দেখার পরে যেন দ্বিতীয় কেউ কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী, আমার আর কোনো ছোট ভাই-বোন এমন সন্ত্রাসী হামলার শিকার না হয়। ”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো: কামারুজ্জামান বলেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনিসুর রহমানকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে একটা মিটিং করেছে আরেকটা মিটিং শেষ প্রতিবেদন জমা দেবে।