১৫ বছর বয়সী কিশোরী গণধর্ণণ মামলার প্রধান দুইজন আসামী র্যাব-৮ এবং র্যাব-১০ এর শ্বাসরুদ্ধকর যৌথ অভিযানে গ্রেফতার।
র্যাব-৮, সিপিসি-১, (পটুয়াখালী ক্যাম্প) এবং র্যাব-১০, কেরানীগঞ্জ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল ০৭/০৫/২০২৪ইং তারিখ সন্ধ্যা ১৮০০ হতে ০৮/০৫/২০২৪ ইং তারিখ দুপুর ১৩৩০ ঘটিকা পর্যন্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগরীর ডেমরা এলাকা হতে বরগুনা জেলার সদর থানার আলোচিত শিশু ধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান ০২ জন পলাতক আসামী ১। মোঃ খলিল (৩৮), পিতা-মোঃ শাহজাহান, সাং-পিটিআই সড়ক, ০৫ নং ওয়ার্ড, বরগুনা পৌরসভা, থানা-সদর, জেলা-বরগুনা ২। মোঃ বশির (৩৫), পিতা-মোঃ আফজাল, সাং-পিটিআই সড়ক, ০৫ নং ওয়ার্ড, বরগুনা পৌরসভা, থানা-সদর, জেলা-বরগুনা’দ্বয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১০/০২/২০২৪ইং তারিখ দুপুর আনুমানিক ১৪০০ ঘটিকায় আসামী মোঃ খলিল (৩৮) ভিকটিম মোসাঃ আছিয়া (১৫), পিতা-মোঃ আফজাল হাওলাদার (৫০), সাং-পিটিআই সড়ক, ০৫ নং ওয়ার্ড, বরগুনা পৌরসভা, থানা-সদর, জেলা-বরগুনা’কে তার বাসার সামনে থেকে ডেকে নিজের বাসায় নিয়ে যায়।
ঐসময় আসামী খলিলের স্ত্রী বাসায় না থাকায় সে ভিকটিম আছিয়াকে একা পেয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয় এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণ পরবর্তীতে এই ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য তাকে হত্যার হুমকি প্রদান করে। একই তারিখ রাত আনুমাকি ২০০০ ঘটিকায় আসামী খলিলের স্ত্রী আকলিমা বেগম ভিকটিম আছিয়াকে ডেকে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় যাওয়ার পর আকলিমা বেগম পরিবারের কাজের বাহানা করে দোকানে চলে গেলে আসামী খলিল পূর্বের ন্যায় ভিকটিম আছিয়াকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আবারও জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ১৫/০২/২০২৪ইং তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ১৯০০ ঘটিকায় ০৪ নং আসামী দুলালের স্ত্রী মোসাঃ রেহেনা বেগম ভিকটিম আছিয়াকে মাটির চুলা বাইরে থেকে রান্না ঘরে উঠানোর কাজে সাহায্য করার জন্য ডেকে নিয়ে যায়। কাজ শেষে ঘরে ফিরে আসার সময় ০৪ নং আসামী দুলাল ভিকটিম আছিয়ার মুখ চেপে ধরে তার বসত ঘরে নিয়ে যায়। যেখানে আগে থেকেই ০২ নং আসামী বশির এবং ০৩ নং আসামী কামাল অবস্থান করছিল। পরবর্তীতে আসামীরা ভিকটিম আছিয়াকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে এবং ঘটনাটি গোপন রাখার জন্য হত্যার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ভিকটিম আছিয়া ঘটনাটি কাউকে না জানিয়ে গোপন রাখে। কিন্তু ভিকটিম আছিয়ার হঠাৎ গর্ভধারণ সংক্রান্ত লক্ষণ দেখা দিলে তার পরিবারের সদস্যরা তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়। পরবর্তীতে সে সকল ঘটনা তার পরিবারের সদস্যদের জানায়।
পরবর্তীতে ভিকটিম আছিয়ার গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে ০১ নং আসামী খলিলের স্ত্রী ০৫ নং আসামী আকলিমা বেগম তাকে গর্ভপাত করানোর জন্য কৌশলে বিভিন্ন ঔষধ খায়িয়ে দেয়। এ ব্যাপারে ভিকটিমের দাদী মোসাঃ আমেনা বিবি বাদী হয়ে বরগুনা জেলার সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে (বরগুনা জেলার সদর থানার মামলা নং-০১/১২৪, তারিখঃ ০১/০৫/২০২৪ইং, ধারাঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০২০) এর ৯(১), ৯(৩)/৩০)। ঘটনাটি র্যাবের নজরে আসলে র্যাব আসামীকে গ্রেফতারের জন্য ব্যাপক ছায়াতদন্ত শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৮, সিপিসি-১ (পটুয়াখালী) এবং র্যাব-১০, কেরানীগঞ্জ এর চৌকস আভিযানিক দল গত ০৭ মে সন্ধ্যা ১৮০০ ঘটিকা হতে ০৮ মে ২০২৪ তারিখ দুপুর ১৩৩০ ঘটিকা পর্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর ডেমরা এলাকা হতে আসামীদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বরগুনা জেলার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।