মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনেই এজলাসে অজ্ঞান হয়ে পড়লেন হাফিজার নামে এক আসামি। জেলার কালাই উপজেলায় একটি ভ্যানের জন্য চাঞ্চল্যকর ভ্যান চালক আবু সালাম (২০) হত্যা মামলায় তিন জনের মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করেছে জয়পুরহাটর একটি আদালত।
মঙ্গলবার (৭ মে) বেলা ১২ টায় মৃত্যুদণ্ডের এ রায় ঘোষণা করেন জয়পুরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মোঃ নুরুল ইসলাম। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশনা প্রদান করে রায় দেয় আদালত।
জয়পুরহাট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাড : নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল জানান, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন, জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার আওড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে হারুন অর রশিদ, মোসলেম উদ্দিনের ছেলে মোস্তাক আহম্মেদ ও জসিম উদ্দিনের ছেলে হাফিজার রহমান। রায় ঘোষণার সময় হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হারুন অর রশিদ আদালতে অনুপস্থিত ছিল।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর জয়পুরহাট সদরের দুর্গাদহ বাজার থেকে সাজা প্রাপ্ত আসামিরা আবু সালামের ভ্যান ভাড়া করে কালাই যায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আবু সালাম কে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর কালাই পৌরসভার আওড়া গ্রামের জনৈক আমজাদ হোসেনের পারিবারিক কবরস্থানে পুরাতন কবরে লুকিয়ে রেখে ভ্যান নিয়ে পালিয় যায়। পরের দিন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ব্যাপারে কালাই থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর্জা মোঃ শাহাজাহান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালাই থানা পুলিশের উপপরিদর্শক আঃ সাত্তার ২০০৫ সালের ৯ জুলাই আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে শুধু মাত্র ভ্যানটি নেওয়ার জন্যই ভ্যান চালক আবু সালামকে খুন করে। পরে ভ্যানটি ২০০০ টাকায় বিক্রি করে নিজেরা ওই টাকা ভাগ করে নেয়।
মামলায় ৭ জনের সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ মঙ্গলবার কালাই উপজেলায় ভ্যান চালক আবু সালাম হত্যা মামলায় তিন জনের মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করে রায় দেয় আদালত। রায় শুনে এজলাসেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন হাফিজার রহমান। এ সময় কোর্ট পুলিশের সদস্যরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করে বলে জানান, পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক আবু ছিদ্দিক।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড : নৃপেন্দ্রনাথ সন্ডল পিপি ও এপিপি গকুল চন্দ্র মন্ডল, শামীমুল ইমাম শামীম, খাজা শামসুল ইসলাম বুলবুল এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড : আহসান হাবিব চপল ও শহিনুর রেজা শানু।