ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার তদন্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ তারেকের নেতৃত্বে ৬ জন গরু চোর চক্রকে সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার (০৫ এপ্রিল) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে চোর চক্রের এসব সক্রিয় সদস্যদের আটক করা হয়।
আসামীরা হলেন কুষ্টিয়ার ইবি থানার কন্দর্পদিয়ার গ্রামের বাবর আলীর ছেলে রুবেল রানা, ঝাউদিয়া গ্রামের মৃদ মোনাই মালিথার ছেলে মিঠুন মালিথা, কন্দর্পদিয়া গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে মোঃ রিয়াজুদ্দিন, রাজ্জাক আলীর ছেলে সোহেল রানা, ঝিনাইদহের কালিশংকরপুর গ্রামের মৃত জহিরুল ইসলামের ছেলে মোঃ মহসীন ও ইবি থানার রাধানগর গ্রামের মৃত বিথারত মন্ডলের ছেলে মাছেম আলী মাসুম।
আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। পুলিশ প্রতিবেদন জানানো হয়, অত্র মামলার বাদী একজন কৃষক এবং পাশাপাশি তার বসত বাড়ির পাশে গোয়াল ঘরে ০২ টি গরু পালন করেন। বাদী তার বসত বাড়ির গোয়াল ঘর মেরামত করার কারণে ৩১ মার্চ বিকাল সাড়ে ০৪ টায় এজাহারে উল্লেখিত গরু ০২ টি বাদী তার আত্মীয় সুলতান মোল্লা (৫০) এর বাড়িতে রাখলে ০২ এপ্রিল রাত অনুমান সাড়ে ১০ টা হতে ০৩ এপ্রিল রাত ৪ ঘটিকার মধ্যে অজ্ঞাতনামা চোরেরা বাদীর আত্মীয় সুলতান মোল্লার বসত বাড়ির গোয়াল ঘর হতে গরু ০২ টি চুরি করে নিয়ে যায়।
এজাহার প্রাপ্তির পর তদন্ত কালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতারকৃত ২ নং আসামী মিঠুন মালিথাকে কন্দর্পদিয়া এলাকা থেকে সাড়ে ৯ টার সময় গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ২ নং আসামী মিঠুন মালিখা এজাহারে উল্লেখিত গরু ০২ টি সে সহ আরো ৫/৬ জন মিলে একটি ট্রাকে করে বাদীর আত্মীয় সুলতান মোল্লার বসত বাড়ির গোয়াল ঘর থেকে চুরি করে তাদের সহযোগী ০৪নং আসামী সোহেল রানার বেয়াই বাড়ী হরিনাকুন্ডু রেখেছে বলে স্বীকার করে।
পরবর্তীতে ২ নং আসামী মিঠুন মালিথা এর স্বীকারক্তি ও প্রদেয় তথ্যের উপর ভিত্তি করে তদন্তে প্রাপ্ত ১ নং আসামী মোঃ রুবেল রানাকে তার বসত বাড়ি কন্দরূপদিয়া, ইবি থানা হতে ১০ টার সময়, ৩ নং আসামী মোঃ রিয়াজুদ্দিনকে তার বসত বাড়ি কন্দর্পদিয়া, ইবি থানা হতে সাড়ে ১০টার সময়, ৪ নং আসামী মোঃ সোহেল রানাকে তার বসত বাড়ি কন্দর্পদিয়া, ইবি, থানা হতে ১০.৪৫ এর সময় ও ০৬নং আসামী মাসুমকে তার বসত বাড়ি রাধানগর, ইবি থানা থেকে সাড়ে ১১ টার সময় গ্রেফতার করা হয়।
পরে মামলার বাদীকে সঙ্গে নিয়ে তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতারকৃত ৪ নং আসামী মোঃ সোহেল রানার দেওয়া তথ্য ও দেখানো মতে এবং বাদীর সনাক্ত মতে আসামী সোহেল রানার বেয়াই তদন্তে প্রাপ্ত ৫ নং আসামী মোঃ মহসীন এর বসত বাড়ির গোয়াল ঘর হতে এজাহারে উল্লেখিত বাদীর চুরি হওয়া ০২ টি গরু ০৫ মার্চ সাড়ে সকাল ৫ টার সময় উদ্ধার পূর্বক জব্দতালিকা মূলে জব্দ করা হয।জব্দকৃত ঘটনাস্থল কালীশংকরপুর হরিনাকুন্ডু হতে সকাল ৫.৪৫ এর দিকে তদন্তে প্রাপ্ত ৫ নং আসামী মোঃ মহসীনকে চোরাই মাল নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধে গ্রেফতার করাসহয়।
প্রাথমিক তদন্তে সূত্রর আসামীগণ আন্তঃজেলা গরু চোর দলের সক্রিয় সদস্য বলে প্রতিয়মান হয়। তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতারকৃত আসামীদের মধ্যে ১ নং আসামী মোঃ রুবেল রানার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন থানাসহ চুয়াডাঙ্গা জেলায় অসংখ্য চুরি, মাদকসহ ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা, ২ নং আসামী মিঠুন মালিথার বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু থানায় চুরি মামলা এবং ০৬ নং আসামী মাছেম আলী মাসুম এর বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থানায় একটি চুরাই মাল হেফজতে রাখা ও বেচাকেনা করার অপরাধে মামলা রয়েছে যার পিসিপিআর অত্র প্রতিবেদন সাথে সংযুক্ত করা হয়।
পুলিশ জানান, মামলাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে জেল-হাজতে আটক রাখার আদেশ দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ইবি থানার তদন্ত অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ তারেক বলেন, ইবি থানা থেকে আমার নেতৃত্বে, সাব ইন্সপেক্টর মোঃ রাসেল মিয়া, সাব ইন্সপেক্টর আব্দুল খালেক ও সাব ইন্সপেক্টর মোঃ ইউসুফের নেতৃত্বে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। প্রথমে সাব ইন্সপেক্টর রাসেল মিয়া মিঠুকে গ্রেফতার করে। মিঠুর তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সকলের সহযোগিতায় অন্য পাঁচ সক্রিয় চোর সদস্যদের আটক করেছি।
তিনি আরো বলেন, আটককৃত চোর সদস্যদের বিরুদ্ধে এর আগে বিভিন্ন থানায় মামলা ও ওয়ারেন্ট রয়েছে। ঈদ সামনে রেখে চোরদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এছাড়া প্রতিদিন বিকালে, রাতে, ভোররাতে নিয়মিত স্পেশাল অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত