ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং “মামা গ্রুপের” প্রধানসহ ০৭ জন সদস্যকে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম
“বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
সম্প্রতি চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ নানা অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ‘মামা গ্রুপ’ নামক কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। নজরদারির এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন, সিসিটিভি ক্যামেরায় প্রাপ্ত নাশকতার ফুটেজ পর্যালোচনায় এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সকল অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ‘মামা গ্রুপের বিভিন্ন সদস্যকে চিহ্নিত করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিশেষ সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে কতিপয় দুষ্কৃতিকারী কিশোর গ্যাং সদস্যরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন নাসিরাবাদ শিল্প এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ইং তারিখ আনুমানিক ২১০০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে “মামা গ্রুপ” নামক কিশোর গ্যাং গ্রুপের গ্রুপ প্রধান ১। মোঃ সিফাত হোসেন (২৬), পিতা-মোঃ মোতালেব, সাং-রঘুয়া, থানা-বারহাট্টা, জেলা-নেত্রকোণা, ২। মোঃ কামরুল ইসলাম (৩৪), পিতা-মৃত ফজলুর রহমান, সাং-দাউদকান্দি, থানা-দাউদকান্দি, জেলা-কুমিল্লা, ৩। মোঃ মনির হোসেন (৩৭), পিতা-মৃত ইলিয়াস হোসেন, সাং-চরজগবন্ধু, থানা-বায়েজিদ বোস্তামী, জেলা-চট্টগ্রাম ৪। মোঃ সোহেল (২৫), পিতা-রুহুল আমিন, সাং-বিবিরহাট, থানা-ফটিকছড়ি, জেলা-চট্টগ্রাম, ৫। মোঃ মনির হোসেন (২৪), পিতা-মৃত আব্দুল মান্নান, সাং-গহিরা, থানা-রাউজান, জেলা-চট্টগ্রাম, ৬। মোঃ কাওসার (২৩), পিতা-মনির হোসেন, সাং-নতুন বাজার, থানা-লাকসাম, জেলা-কুমিল্লা এবং ৭। মোঃ লালু @ সোহেল (২০), পিতা- মোঃ ছাব্বির, সাং-পাহাড়িকা স্টারশীপ, থানা-বায়েজিদ বোস্তামী, জেলা-চট্টগ্রাম’দের আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিদের দেহ তল্লাশী করে তাদের নিজ হাতে বের করে দেয়া মতে ০২টি স্টিলের চাপাতি, ০১টি ফোল্ডিং টিপছুরি এবং ০২টি স্টিলের ক্ষুর উদ্ধারসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা “মামা গ্রুপ” নামক কিশোর গ্যাংয়ের হয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রাম মহানগরীসহ বিভিন্ন এলাকায় রাত্রীকালীন সিএনজি, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং ডাকাতি করে আসছিল। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে আসামিগণ ডাকাতির উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর নাসিরাবাদ শিল্প এলাকায় একত্রিত হয়েছিল।
উল্লেখ্য, “মামা গ্রুপ” নামক এই কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা চট্টগ্রাম মহানগরীর নাসিরাবাদ শিল্প এলাকায় স্থানীয়ভাবে রাস্তায়, বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন গলি ও রোডে ছিনতাই, চাঁদাবাজী, নিজেদের মধ্যে মারামারি, অন্য সাধারণ কিশোরদের মারধর ও প্রাননাশের হুমকী প্রদান, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন এবং মাদক সেবন করে বলে জানা যায়। এছাড়াও তারা সাধারণ মানুষসহ দৈনন্দিন চলাচলরত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভীতি প্রদর্শন এর মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ছিনতাই করে আসছিল বলে অকপটে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামি এবং উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।