মিরপুর প্রতিনিধি#
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মচারী প্রতারনার মাধ্যমে ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দিয়েছে। তিনি আর কেউ নন খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্ডিওগ্রাফার মোঃ হাফিজুর রহমান। সে মিরপুরে কার্ডিওগ্রাফার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে সময় তিনি ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলী হয়ে যায়। মিরপুর থাকা অবস্থায় সে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অসহায়, বিধবা ও প্রতিবন্ধী মানুষকে নানা রকম প্রলোভন দেখিয়ে উক্ত টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা রয়েছে। এদিকে অসহায় এই মানুষগুলো তাদের কষ্টার্জিত টাকা ফেরত না পেয়ে নিদারুন কষ্টে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে। মোঃ হাফিজুর রহমানের প্রতারনার শিকার শারমিন সুলতানা নামের এক বিধবা নারী বলেন, খেয়ে না খেয়ে তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম। সেই টাকা মোঃ হাফিজুর রহমান ব্যবসা করে লাভ দেবেন বলে নিয়েছিলেন। টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর থেকে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এখন ফোন ও ধরে না। আবার টাকা ও ফেরত দিচ্ছে না। এখন তো আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে মানবতার জীবনযাপন করছি। মিনু খাতুন নামের এক বিধবা বলেন, আমার পাঁচ লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে মোঃ হাফিজুর রহমান পালিয়ে গেছে। আমি এখন কি করবো, কার কাছে বিচার চাইবো। ভুক্তভোগী হালিমা খাতুন নামের আরো এক প্রতিবন্ধী নারী বলেন, মোঃ হাফিজুর রহমানের মিথ্যা আশ্বাসের প্রলোভনে পড়ে আমার কষ্টার্জিত সমস্ত অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আজ সে নিরুদ্দেশ রয়েছে। তবে লোকমুখে শুনেছি সে নাকি খুলনা ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি হয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছে। জনগণের এত টাকা লুটপাট করে কিভাবে একজন সরকারি চাকরিজীবী আবারও চাকরিতে বহাল থাকে সেটাই বুঝতে পারছি না। আমি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে করে সঠিক তদন্ত করে ভুক্তভোগীদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া যায়। সে ব্যাপারে প্রসাশন ব্যবস্থা নিবেন। এদিকে বিষয়টি অধিক তদন্ত ও ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক কার্ডিওগ্রাফার মোঃ হাফিজুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. পীযূষ কুমার সাহা বলেন, আমি হাসপাতালে যোগদান করার পূর্বেই কার্ডিওগ্রাফার মোঃ হাফিজুর রহমান খুলনায় বদলি হয়ে গেছেন। তবে আমি লোকমুখে শুনেছি তিনি নাকি এ এলাকার অনেক মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দিয়েছেন। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মোঃ মনজুরুল মুরশেদ বলেন, এ ব্যাপারে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে ভুক্তভোগীরা তাদের টাকা ফেরত পেতে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মহাপরিচালকের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।