নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কুষ্টিয়ার মিরপুরের হালসায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী আলামিন ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়ার বিশেষ জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আলামিন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শাকদহচর গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত
ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদেরকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এ মামলার অপর আসামি ও আলামিনের প্রথম স্ত্রী জানেরা খাতুনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর পূর্বে শিউলি খাতুনকে বিয়ে করেন আসামি আলামিন। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুর উপজেলার হালসা গ্রামের হালসা ক্লিনিক অ্যান্ড টার ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের (বর্তমান হালসা বাজার জয় চিকিৎসালয়) দ্বিতীয় তলায় ডাক্তার বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। পারিবারিক কলহের জেরে ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবর রাতে স্ত্রী শিউলি খাতুনকে আসামি শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আলামিন। পরে আশপাশের লোকজন টের পায়। খোঁজ পেয়ে মিরপুর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার বাজারে করে মর্গে পাঠায়। নিহতের বাবা আসাদুল নিবন্ধিত বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে আসামি আলামিনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, স্ত্রীকে হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় স্বামী আলামিনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান
করা হয়েছে। উল্লেখ্য, স্ত্রী হত্যা ছাড়াও আলামিনের বিরুদ্ধে এলাকায় আরও অনেক অপকর্ম ও অপচিকিৎসার অভিযোগ রয়েছে। সে করোনাকালীন ১৫ জুন ২০২০ দুপুর ১২ দিকে কুষ্টিয়া শহরের একতা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুয়া এমবিবিএস সেজে চিকিৎসা দেওয়ার সময় হাতে ধরা পড়ে। এবিষয়ে আলামিনসহ অজ্ঞাত নামা ৪/৫ জনকে করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হয়। মামলা নং ২৩, তারিখ: ১৫/০৬/২০২০ খ্রিঃ। এছাড়াও হালসা জয় ক্লিনিকে অন্য কোনো এমবিবিএস ডাক্তার, টেকনোলজিস্ট ও প্যাথলজিস্ট না থাকায় তিনি নিজেই আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইকো, ইসিজি, সিবিসি সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। তাছাড়া জয় ক্লিনিকের নিবন্ধন নিয়েও সন্দেহ আছে এলাকাবাসীর।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত