'বেনাপোল এক্সপ্রেসে ছিল আমার বোন। ওর খবর এখনও পাইনি ভাই। তাই আপনাদের মাধ্যমে চেষ্টা করতেছি। আমার বোনকে খুঁজে দেন ভাই। কোন জায়গায় যদি আমার বোনের খোঁজটা পাই।' এভাবেই কান্না করতে করতে বোনকে খুঁজছেন মামুন।
মামুন এলিনা ইয়াসমিনের (৪০) এর ভাই। এলিনা ইয়াসমিন রাজবাড়ি থেকে ঢাকায় গতকাল শুক্রবার বেনাপোল এক্সপ্রেসে ফিরছিলেন। সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে এলিনা রাজবাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। তাঁর স্বামী সাজ্জাদ ছিল ঢাকায়।
এলিনার ভাই মামুন আজ শনিবার (৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমের কাছে তাঁর বোনকে খুঁজতে এভাবে আকুতি করেন। তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, এলিনা স্বামীসহ ঢাকার মিরপুরের ৬০ ফিটে থাকত। তার স্বামী সাজ্জাদ বায়িং হাউজে চাকরি করে। এলিনা ইয়াসমিন গৃহিণী ছিল। ছয় মাসের ছেলে আরফান সহ তাদের পরিবার। এলিনা ৬ মাসের শিশুসহ রাজবাড়ীতে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। কিন্তু ফিরতি ট্রেনে আগুন লাগে। এরপর থেকে এলিনা নিখোঁজ রয়েছে। এলিনাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না তার ভাই মামুন।
মামুন গণমাধ্যমকে বলেন, এলিয়ানের শিশু সন্তান আরফান এখন আমাদের কাছে আছে। যেহেতু তার শ্বাসনালীতে অনেক ধোঁয়া গিয়েছে। তাই ডাক্তার বললো ভয়ের কিছু নেই, আমরা একটু অবজারভেশনে রাখব। আমার বোনের খবর এখনও পাইনি ভাই। তাই আপনাদের মাধ্যমে চেষ্টা করতেছি। আমার বোনকে খুঁজে দেন ভাই। কোন জায়গায় যদি আমার বোনের খোঁজটা পাই।
মামুন বলেন, একসাথে এক পরিবারের পাঁচজন ট্রেনে ছিল। চার জন বের হতে পেরেছে। ওই ট্রেনে আমার ফুফাতো বোন ছিল, সে সময় তার কোলে ছিল ভাগনে। তাকে নিয়ে আমার ফুফাতো বোন বের হতে পেরেছে। ও গেট দিয়ে বের হয়েছে কিন্তু ধোঁয়ায় কিছু দেখতে পারে নাই। আমার বোন কী বের হতে পেরেছে, নাকি পারে নাই। তার খোঁজ আমরা পাচ্ছি না।
তিনি জানান, কোনো হসপিটাল আমার বোনের সন্ধান দিতে পারছে না। ঢাকা মেডিকেলে খোঁজ নিছি, এখানে খোঁজ নিচ্ছি কোথাও পাচ্ছি না তারপরে মুগদায় গেছি; কোথাও বোনকে পাচ্ছি না।
যশোরের বেনাপোল থেকে ট্রেনটি ঢাকায় আসছিল। সায়েদাবাদ এলাকা অতিক্রম করার সময় ওই ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে গোপীবাগ এলাকায় থামানো হয়। আগুনে ট্রেনটির তিনটি কোচ পুড়ে গেছে। ট্রেনে আগুনে দুই নারী, এক শিশুসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাত ৯টার দিকে চলন্ত ট্রেনটিতে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত