চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালের উপর হামলা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের ঈগল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার নির্বাচনী প্রচারনায় হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র প্রদর্শণ করে অপহরণ চেষ্টা এবং আসামী ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় পুলিশের হাতে আটক চার।
শনিবার রাত সাড়ে সাতটার পরে চুয়াডাঙ্গা সদরের শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের নতুন ভান্ডারদহ গ্রামের মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরিকল্পিত ভাবে পাশ্ববর্তী কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান মানিকের নির্দেশনায় হত্যার উদ্দেশ্যে ঈগল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার উপর হামলা করে নৌকা প্রতীকের সমর্থক নামধারী সন্ত্রাসীরা। এর মধ্যে স্থানীয় সরোজগঞ্জ ফাড়ির পুলিশ পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এবং তিন সন্ত্রাসীকে আটক করে। এসময় ঈগল মার্কার কর্মী-সমর্থকরা পরিস্থিতি শান্ত করলেও পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত করে পাশ্ববর্তী কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান মানিক। তিনি এসেই পুলিশকে গালিগালাজ করে আসামি ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়। এরপর প্রার্থীকে অকথ্য ভাষায় এমনকি ধর্মীয় উস্কানিমূলক কথাও বকাবকি করে। তারপর তার নেতৃত্বে পুলিশের উপস্থিতিতেই ঈগল মার্কার কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালায়।
এসময় চুয়াডাঙ্গা জেলা যুব মহিলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আফরোজা পারভীন, জেলা যুব মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোসাঃ আলিজা ও নির্বাচনী কর্মী নাজনীন আক্তার (৪৫), রাকিব, সালমান ও আফিলসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। হামলার সময় নারী সমর্থক ও নারী নেত্রীদের উপর শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায় বলে জানিয়েছেন যুব মহিলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আফরোজা পারভীন। তিনি আরো বলেন, নারী কর্মীদের উপর হামলার সময় অত্যন্ত অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন হাসানুজ্জামান মানিকের সন্ত্রাসীরা।
এসময় বেশ কয়েকটি রিকশা ভ্যান ভাংচুর করে হামলাকারীরা। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল চলে আসেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা, পুলিশ সুপার ফয়জুর রহমানসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের বেশ কয়েকটি টীম। এরপরও পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ মানিক চেয়ারম্যানসহ চারজনকে আটক করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনার পর অত্র এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা শহরসহ শংকচন্দ্র ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী কুতুবপুর ইউনিয়ন জুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া নতুন ভান্ডারদহ গ্রামে পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম জোর টহলে আছে।
ভান্ডারদহ গ্রামের আবু ছদ্দি নামের আরেকজন বলেন, আমরা ঈগলের অফিসে বসে ছিলাম, আমাদের নেতা দিলীপ কুমার আগারওয়ালা আসবেন, কিন্তু পরিকল্পিতভাবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন আমাদের অফিসের সামনে এসে উলটা পালটা শ্লোগান দিতে থাকে। এর মধ্যে আমাদের নেতা আসার সাথে সাথেই তারা হামলা চালায়।
ঈগল প্রতীকের প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা অভিযোগ করে বলেন, ‘আধা ঘণ্টা ধরে গাড়ি আটকে আমার নামের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অশালীন স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। আমি গাড়ি থেকে নামলে তারা মারমুখী আচরণ করে। পরে পুলিশকে খবর দিই। পরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।’
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ধারনা ছিল একজন প্রার্থী হিসেবে কিছুটা সম্মান পাবো। কিন্তু যে ধরনের আচরণ করা হয়েছে তা কোনভাবেই কাম্য নয়। শুধু একবার নয়, দফায় দফায় আমার এবং আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এর নেতৃত্বে ছিলেন কুতুবপুর ইউপিj চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলী হাসানুজ্জামান মানিক।’