চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড এর গার্মেন্টস কর্মী ধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি মোঃ মুসলিম’কে পতেঙ্গা থানাধীন কাঠগড়স্থ জাইল্লা পাড়া মোড় থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
**********************************************
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার সহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগণের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
ভুক্তভোগী ভিকটিম (৩৫) চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার একজন গার্মেন্টস কর্মী এবং আসামি মোঃ মুসলিম একই এলাকার একজন দোকান কর্মচারী। বাজার করার সুবাদে আসামির সাথে ভিকটিমের পরিচয় হয় এবং পরিচয়ের সূত্র ধরে আসামির সাথে ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে আসামি ভিকটিমকে ফেনী জেলার দাগনভূঁঞা থানাধীন একটি ভাড়া বাসায় এবং কক্সবাজারের একটি হোটেলে নিয়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। যার ফলে ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এবং বিবাহের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে আসামি মোঃ মুসলিম ভিকটিমকে চট্টগ্রামের একটি কাজী অফিসে নিয়ে মিথ্যা বিবাহের নাটক করে। পরবর্তীতে ভিকটিম একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় এবং উক্ত ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে ভিকটিম তার খালার বাড়ি ফেনীতে আশ্রয় নেয়। পরবর্তীতে ভিকটিম আসামি মোঃ মুসলিমকে সন্তান সহ তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এক পর্যায়ে আসামি মোঃ মুসলিম ভিকটিমকে সন্তান সহ চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ফেনীর মহিপাল এলাকার একটি বাস কাউন্টারে নিয়ে আসে এবং ভিকটিমকে বাস কাউন্টারে রেখে পানি কেনার কথা বলে অন্য একটি বাসযোগে চট্টগ্রামে চলে আসে। ভিকটিম দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর আসামি মোঃ মুসলিম এর সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে আসামির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়ে ভিকটিম তার খালার বাড়িতে ফিরে যায়।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিম বিজ্ঞ আদালতে আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত থানাকে উক্ত অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে এফআইআর প্রস্তুত করার নির্দেশ প্রদান করেন। ফলে, ফেনী জেলার দাগনভূঁঞা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা রুজু হয়। যার মামলা নং- ১৬/৯৯, তারিখ- ২০ জুলাই ২০২৪ ইং, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১)।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সূত্রে বর্ণিত মামলা রুজু হওয়ার পর এজাহারনামীয় একমাত্র পলাতক আসামিকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারির এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত ধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি মোঃ মুসলিম চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা থানাধীন কাঠগড়স্থ জাইল্লা পাড়া মোড় এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং তারিখে আনুমানিক ২০১০ ঘটিকার সময় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মোঃ মুসলিম (৪৫), পিতা- নুরুল ইসলাম, সাং- চর জাঙ্গালিয়া, থানা- কমলনগর, জেলা- লক্ষীপুর, বর্তমানে আমান উল্ল্যাপুর, থানা- দাগনভূঁঞা, জেলা- ফেনী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে ধর্ষণের মামলার আসামি হওয়ার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে সে মামলা দায়ের হওয়ার পর হতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে তাকে ফেনী জেলার দাগনভূঁঞা থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
