লালমনরিহাট জেলার কালীগঞ্জ থানার অপহরণ মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামি মোঃ মোস্তাফা কামালসহ ০২ জন অপহরণকারী’কে চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর এলাকা হতে আটক এবং ভিকটিকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
অপহৃত ভিকটিম (১৬) লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। বখাটে মোঃ মোস্তফা কামাল ভিকটিমের পারিবারিক গাড়ী চালক হিসাবে চাকুরি করত। চাকুরির সুবাধে বখাটে মোঃ মোস্তফা কামাল তার মালিকের অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উক্ত্যক্ত করে আসছিল।
পরবর্তীতে প্রেমের প্রস্তাবের বিষয়টি ভিকটিম তার পরিবারকে অবগত করলে ভিকটিমের পরিবার বখাটে মোঃ মোস্তাফা কামাল’কে চাকুরিচ্যুত করে। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান এবং চাকুরিচ্যুত করায় বখাটে মোঃ মোস্তফা কামাল ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমকে অপহরণ করার হুমকি প্রদান করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ এপ্রিল ২০২৪ইং আনুমানিক ১২৩০ ঘটিকায় ভিকটিম পারিবারিক প্রয়োজনে বাড়ী হতে বের হয়ে না ফিরায় তার পরিবার সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করা কালে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, কাকিনা মোড় এলাকায় হতে বখাটে মোঃ মোস্তফা কামাল এবং তার অন্যান্য সহযোগীরা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাস যোগে অপহরণ করতঃ অজ্ঞাত স্থানে নিয়া যায়।
উক্ত ঘটনায় অপহৃত ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে লালমিনরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানায় বখাটে মোঃ মোস্তফা কামালকে প্রধান এবং ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামি করে একটি মামলা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৩৯, তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০২৪ইং, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত/০৩) এর ৭/৩০। মামলা রুজু হওয়ার পর লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানা পুলিশ জানতে পারে মামলার আসামি বখাটে মোঃ মোস্তাফা কামাল এবং তার অন্যান্য সহযোগী আসামিরা ভিকটিমকে নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে ভিকটিমের পরিবার ভিকটিমকে দ্রুত উদ্ধার এবং অপহরণকারী’দের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার এবং আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী ও ছায়াতদন্ত অব্যহত রাখে।
নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, উক্ত মামলার প্রধান আসামি মোঃ মোস্তফা কামাল এবং মোঃ আব্দুল খালেক চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানাধীন নিমতলী এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭,চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং তারিখ আনুমানিক ০০৩০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধারসহ অপহরণকারী ১। মোঃ মোস্তফা কামাল (২৩), পিতা-মোঃ আব্দুল মালেক এবং ২। মোঃ আব্দুল খালেক (৪৫), পিতা-মৃত ভেন্টু শেখ উভয় সাং-নামুরি দোলাপাড়া, থানা-আদিতমারি, জেলা-
লালমনিরহাট’দের আটক করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা সূত্রে বর্ণিত মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামি। গ্রেফতারকৃত আসামদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, তারা মামলা রুজু হওয়ার পর আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানাধীন নিমতলী এলাকায় আত্মগোপন করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্ত পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে লালমনিরটাহ জেলার কালীগঞ্জ থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।