ঝিনাইদহে ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা
ঝিনাইদহে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা। শনিবার (২০ জানুয়ারী) জেলার সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুল হাসান মাসুমের আয়োজনে বেতাই গ্রামের দক্ষিণ মাঠে সকাল থেকে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
প্রতিবছর কৃষকদের আনন্দ দিতে এ স্থানে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
প্রতিযোগিতা ঘিরে গত বৃহষ্পতিবার থেকে এই মাঠে শুরু হয়েছে গ্রামীণ মেলা ও গ্রামের লোকজনের বাড়িতে আসতে শুরু করে আত্মীয়-স্বজন। ফলে বেতাই গ্রামের এই প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ৩দিন ধরে উৎসবের আমেজ চলছে বলে জানা যায়।
প্রতিযোগিতায় ঝিনাইদহ জেলার সকল উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী যশোর, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা জেলার গাড়িওয়ানরাও অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৩টি পুরষ্কারের মধ্যে দুটিই গেছে যশোর ও চুয়াডাঙ্গার গাড়িওয়ানদের হাতে।
জানা যায়, কৃষিতে আধুনিকতার ছোয়াই যেমন বদলে গেছে কৃষি যন্ত্রপাতী তেমনই বদলে গেছে কৃষি যানবাহন। এখন গরুর গাড়ির প্রচোলনও কমতে শুরু করেছে। এর পরিবর্তে কৃষকরা পাওয়ার ট্রিলার ও ট্রলি ব্যবহার করছেন। এমনিক ধানের রোয়া লাগাতেও ব্যবহার করছেন আধুনিক যান্ত্রীক প্লান্টার। তবে এই প্রতিযোগিতা ঘিরে এলাকার কৃষক তো বটেই আশ-পাশের জেলাতেও প্রতিযোগিতার গরু ও গাড়ি তৈরি প্রবণতা। এবছর এই প্রতিযোগিতা দেখতে বেতাই দক্ষিণ মাঠে ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষের সমাগম হয়। প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন জেলার ২১টি গাড়ি অংশ নেয়। নক আউট ভিত্তিক এই খেলায় সকল রাউন্ড শেষে প্রথম স্থান অধিকার করে মহেশপুরের মিয়ারাজ নামের এক গাড়োয়ান। ২য় হন যশোর সদর উপজেলা জোড়াদাহ গ্রামের আলী আকবর নামের এক গাড়োয়ান এবং ৩য় হন চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার গঙ্গারাজপুর গ্রামের সোহাদ আলী নামের এক গাড়োয়ান।
প্রতিযোগিতা শেষে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু ১ম বিজয়ীর হাতে ২০ হাজার নগদ টাকা, ২য় বিজয়ীর হাতে ১৫ হাজার নগদ টাকা ও ৩য় স্থান অধিকারীর হাতে ১০ হাজার নগদ টাকা পুরষ্কার হিসাবে তুলে দেন। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বিজীত গাড়োয়ানদেরকেও দেওয়া হয় শান্তনা পুরষ্কার।
প্রধান অতিথি সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, গ্রামের মানুষদের নিয়ে এতো সুন্দর আয়োজন হতে পারে এখানে না আসলে বোঝা সম্ভব নয়। এই প্রতিযোগিতা ঘিরে আশপাশের গ্রাম গুলোতে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। বাড়িতে বাড়িতে এসেছে অতিথি। মাঠে প্রায় ২০ হাজার মানুষের সমাগম দেখলাম। আমি অভিভূত। কৃষকদের নিয়ে এ এক অন্যরকম আনন্দের অনুষ্ঠান। আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলবো এই ধরণের আয়োজনের পৃষ্টপোষকতা করতে। এবছর প্রথম স্থান অধিকারীকে ২০ হাজার নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে আগামী বছর যেন আয়োজকরা প্রথম পুরষ্কার হিসাবে ৫০ হাজার টাকা মূল্যের প্রাইজ মানি দিতে পারে সেই লক্ষ্যে সরকারের কৃষকদের এই আনন্দ উৎসবে ভাগিদার হওয়া উচিৎ।