পরিবারের পছন্দের পাত্রীর সাথে ঠিক হয় বিয়ে, গায়ে হলুদের দিন আত্মীয় স্বজনের আগমনে মুখরিত বিয়ে বাড়ি। নিজের গায়ে হলুদের সদাই করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে ফেনী শহরে যান বর। রাত গভীর হলেও বর বাড়ি ফিরেনি তাই সবাই তাকে খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে উঠেন কিন্তু বরের খোঁজ মিলেনি। বরকে খোঁজাখুজিতে ব্যস্ত পরিবার বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দেন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
অবশেষে ২০১০ সালের মার্চ মাসে নিঁখোজ বরের সন্ধান মিলে রাঙ্গামাটি জেলার তবলছড়ি উপজেলায়। বরের নাম মোস্তাফিজুর রহমান খোকা মিয়া। সে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের পালগিরি গ্রামের জালাল মেম্বার বাড়ির মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে পরিবারের সদস্যরা তবলছড়ি থেকে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন।
মোস্তাফিজের বোন বিবি রহিমা নাজমা বলেন, আমার ভাই দীর্ঘ ১৪ বছর আগে তার গায়ে হলুদের কাপড় ছোপড় কেনার উদ্দেশ্যে ফেনীতে যায়। বাড়িতে ফিরে না আসলে দীর্ঘ এ সময় তাকে অনেক খোঁজাখুজি করে সন্ধান পায়নি। হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সোনাগাজী থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছি। প্রশাসন ভাইকে খুঁজে বের করতে পারেনি।
গত কিছুদিন আগে আকাশ নামে প্রতিবেশী কাজের সুবাদে রাঙ্গামাটি জেলার তবলছড়ি যায়। সেখানে জামে মসজিদের পাশে আমার ভাইকে চা দোকানে অবস্থান করতে দেখে প্রতিবেশী আকাশ। ভাইয়ের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি সে আমাদের অবহিত করে। পরে গত বুধবার রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সুফিয়ানকে সাথে নিয়ে তবলছড়ি গিয়ে ভাইকে শনাক্ত করে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় বাড়িতে ফিরিয়ে আনি।
ইউপি সদস্য আবু সুফিয়ান বলেন, মোস্তাফিজ তবলছড়িতে স্থানীয় মোস্তাফা নামের এক ব্যক্তির আশ্রয়ে ছিলেন। মোস্তফা আমাদের জানায় গত ১২ বছর আগে মোস্তাফিজকে তবলছড়িতে ঘোরাঘুরি করা অবস্থায় দেখতে পায়, তখন সে নাম ঠিকানা জানাতে পারেনি।সেসময় থেকে সে মোস্তফার আশ্রয়ে থেকে রাজমিস্ত্রীর জোগালি হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।
তিনি আরো বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান নিখোঁজ হওয়ার পূর্বের কোন ঘটনাই মনে করতে পারছে না। আমাদের ধারণা কেনাকাটা করার জন্য যাওয়ার পথে হয়তো মলম পার্টির খপ্পরে পড়ে সে নিখোঁজ হয়। চলাফেরা স্বাভাবিক হলেও মোস্তাফিজের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, পূর্ব পরিচিত কাউকে ছিনতে পারছেনা। মানসিক সুস্থ্যতার জন্য অতি দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সুদ্বিপ রায় পলাশ বলেন নিখোঁজ মোস্তাফিজের বাড়ি ফেরার বিষয়টি পরিবার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আমাদের অবহিত করেছেন।