স্টাফ রিপোটার কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রেমের টানে বাড়ি থেকে পালিয়ে দুই সন্তানের বাবাকে বিয়ের ১৪ মাসের মাথায় লাশ হয়ে ফিরলো অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের খোদ্দভালুকা গ্রামে। চলতি মাসের ১০ তারিখে শিক্ষার্থীর মরদেহ হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে রেখে নিরুদ্দেশ রয়েছেন ঘাতক স্বামী।
১৫ সেপ্টেম্বর রোববার নিহত শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় হৃদয়বিদারক দৃশ্য। মেয়ে হারিয়ে বাবা-মায়ের পাগল প্রায় অবস্থা। নিহত হয়েছেন, পান্টি ইউনিয়নের খোদ্দভালুকা গ্রামের আক্তারুজ্জামানের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস বিথী। তিনি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিহতের মা মায়া খাতুন জানান, প্রায় দুই বছর আগে তার বাড়ির রেফ্রিজারেটর নষ্ট হলে পাশ্ববর্তী শৈলকূপা উপজেলার কাঁচেরকোল গ্রামের আমজাদ জোয়ার্দারের ছেলে রেফ্রিজারেটর মিস্ত্রি রানা তাদের বাড়িতে আসেন মেরামত করার জন্য। তখন থেকেই তার মেয়ে বিথীর সাথে রানার যোগসূত্র স্থাপন হয়।
কিছুদিন পর রানা ও বিথীর প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি তারা জানতে পারেন। এবং অসম সম্পর্ক নষ্টের জন্য তারা সার্বিকভাবে চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে হঠাৎই বিথী বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলে তারা কুমারখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এবং পালিয়ে যাবার কিছুদিন পর বিথী মোবাইল ফোনে জানায় রানার সাথে বিয়ে করে নারায়ণগঞ্জ আছেন। এরপর মাঝে মাঝে বিথীর সাথে তারা যোগাযোগ করতেন কিন্তু রানা যোগাযোগ না করার জন্য হুমকি দেবার পর থেকে মেয়ের সাথে তাদের আর কোন যোগাযোগ ছিলোনা।
চলতি মাসের ১০ তারিখে রানা মোবাইল ফোনে জানায় বিথী মারা গেছে এবং মরদেহ নারায়নগঞ্জ খানপুর হাসপাতালে আছে । তারপর থেকেই রানা মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে নিরুদ্দেশ রয়েছেন। বিথীর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে মরদেহ সনাক্ত করে ময়নাতদন্তের পর বাড়িতে এনে দাফন করেছেন বলে জানান। রানা তার মেয়েকে হত্যা করেছে দাবী করে তিনি প্রশাসনের কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। রানার বাবা আমজাদ জোয়ার্দার জানান, ১৪ বছর আগে রানাকে পারিবারিকভাবে বিয়ে দিয়েছেন।
রানার স্ত্রী ও দুটি সন্তান রয়েছে। প্রায় দেড় বছর আগে রানার সাথে বিথীর সম্পর্কের বিষয়টি তিনি জানতে পারেন। এবং রানাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। তার কিছুদিন পর রানা বিথীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। তারপর থেকে রানা স্ত্রী সন্তানের খোঁজ নেয়না এবং তাদের সাথে কোন সম্পর্ক নাই। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকিবুল ইসলাম জানান, সংশ্লিষ্ট থানা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।