রায়পুরায় পূর্ব শত্রুতার জেরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা, আটক-১
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে চাঁনতারা বেগম (৩৮) কে মারধর, শ্লীলতাহানি, শ্বশুর লাল মিয়া ও দেবর ইসমাইলকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটায় রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের মুর্শিদাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চাঁনতারা বেগম বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে রায়পুরা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ২৫/২৯৬। তাং-২৩/০৯/২৩।
অভিযুক্তরা হলেন, শ্রীনগর ইউনিয়নের মুর্শিদাবাদ গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে মানিক মোল্লা (৬০) ও তার ছেলে মামুন মোল্লা (২৬), মৃত করিম মিয়ার ছেলে নবী হোসেন (২৮), হাসান আলীর ছেলে মাশরাফুল ওরফে আবু বকর (২৮), হাফিজ উদ্দিনের ছেলে তাজেল মিয়া (৪২) ও ও তার ছেলে ইসমাইল (২৩)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী মামুন মোল্লার সাথে বিরোধ চলে আসছিলো।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে লাল মিয়ার বসতবাড়িতে মামুন মোল্লার নেতৃত্বে তার সহযোগীরা দা, চাপাতি ছুরি, লোহার রড, শাবল সহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে লাল মিয়ার বাড়িতে প্রবেশ করে তার বড় ছেলের বউ চাঁনতারা বেগমের ঘরে ঢুকে শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে। তার ডাক-চিৎকারে লাল মিয়া ও তার ছোট ছেলে ইসমাইল পাশের ঘর থেকে বের হয়ে তাদের বাঁধা দেওয়া চেষ্টা করলে মামুন মোল্লা গংরা চাপাতি ও লোহার রড দিয়ে লাল মিয়া ও ইসমাইলের ওপর হামলা করে। এতে লাল মিয়ার মাথা ও ইসমাইলের পিঠ ও পায়ের হাড় ভেঙে যায়। তাদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারী পালিয়ে যায়। পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। মামলার বাদী জানান, দীর্ঘদিন ধরে মামুন মোল্লাদের সাথে তাদের বিরোধ চলছিলো। রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের দরজা খোলা মাত্রই আমার মুখ, হাত চেপে ধরে ঘরের ভিতর নিয়ে শ্লীলতাহানিতা করার চেষ্টা করে। আমার ডাকে আমার শ্বশুর ও দেবর পাশের ঘর থেকে বের হয়ে আমাকে উদ্ধার করে। এসময় তারা আমার চুলের মুঠি ও শরীরের কাপড় টেনে ছিঁড়ে ফেলে এবং শ্বশুরকে চাপাতি দিয়ে মাথায় কোপ দেয় এবং আমার দেবরকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সারা শরীর নীলা ফুলা জখম, পিঠ এবং পায়ের হাড় ভেঙে দেয়। তাদের ভয়ে আমরা এবং আমাদের পরিবার আতংকে দিন কাটাচ্ছি। লাল মিয়া জানান, আমার ছেলের বউয়ের ডাক-চিৎকারে ঘর থেকে বের হয়ে ছেলের ঘরের দিকে ছুটে গেলে দেখি তারা আমার ছেলের বউয়ের মুখ ও হাত ধরে টানাটানি করছে। এর প্রতিবাদ করলে তারা আমার মাথায় চাপাতি দিয়ে আঘাত করলে আমি মাটিতে পড়ে যাই এবং আমার ছোট ছেলে ইসমাইলকে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে। ইসমাইল জানান, ২/৩ বছর প্রতিবেশী মামুনের সাথে বিরোধ ছিলো। সে প্রতিনিয়ত আমাদেরকে অত্যাচার করত। তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়ি। সে শ্রীনগর ইউনিয়ন ও পান্থপাশা এলাকার কুখ্যাত চাঁদাবাজ। কিছুদিন আগে অথাৎ প্রায় আাড়াই মাস ধরে আমার বড় ভাইকে মিথ্যা সাজানো মামলা দিয়ে তারা জেলে রেখেছে। আজ তারা আমার বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে আমার ভাবীকে শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাপ্পি কবিরাজ জানান, এজাহার নামীয় আসামি তাজেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।