কুষ্টিয়ায় শাওন ক্লিনিকে এ্যানেসথেসিওলজিস্ট ডাক্তার বিহীন অপারেশনের অভিযোগ
কুষ্টিয়া শহরের সাদ্দাম বাজার এলাকায় অবস্থিত নিউ শাওন ক্লিনিকে এ্যানেসথেসিওলজিস্ট ডাক্তার বিহীন অপারেশন করার অভিযোগ উঠেছে। রোগীর ছাড়পত্রে যে এ্যানেসথেসিওলজিস্টের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তিনি শাওন ক্লিনিক চেনেনই না বলে জানিয়েছেন।
জানা যায়,বটতৈল স্কুল মোড় এলাকার শেখ শরিফুল ইসলামের শিশু কন্যা নিসা (১১) পেটে ব্যথা নিয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। এরপর প্রতিবেশীর পরামর্শে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সাদ্দাম বাজার এলাকায় অবস্থিত নিউ শাওন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হয়।এরপর ক্লিনিক থেকে কিছু রিপোর্ট করতে দেয়।রিপোর্ট দেখে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জরুরি অপারেশন করতে হবে বলে জানান।ডাঃ আশিকুর রহমান এবং এ্যানেসথেসিওলজিস্ট তায়েফ উদ্দিন অপারেশন করবেন বলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানান।ওইদিন রাত ১০ টায় অপারেশন করা হয়। এছাড়াও এই দুজন ডাক্তারের নাম রোগীর ছাড়পত্রেও লেখা আছে।কিন্তু রোগীর পিতা জানান সেখানে তিনি কোনো ডাক্তার দেখেননি।যাদের দেখেছেন তাদের ডাক্তার বলে মনে হয়নি।অপারেশনের কয়েকদিন পরে রোগীর অপারেশনের স্থানে সমস্যা হলে শরিফুল ইসলাম ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন এবং ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাছে যান।কিন্তু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে দেয়নি বলে জানান রোগীর পিতা।তাছাড়া ছাড়পত্রে উল্লেখিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাঁর নাম আশিক আরেফিন বলে জানান। যা রোগীর ছাড়পত্রের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ। এছাড়া ছাড়পত্রে উল্লেখিত এ্যানেসথিওলজিস্ট ডাঃ তায়েফ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি শাওন ক্লিনিক চেনেনই না বলে জানান।তাছাড়া দু’বছরের মধ্যে কুষ্টিয়াতে আসেননি।এছাড়াও ক্লিনিক ম্যানেজার নাসিম অকপটে স্বীকার করেন যে অল্প পয়সার সব অপারেশন এ্যানেসথেসিওলজিস্ট বাদেই হয়।
শাওন ক্লিনিকের ম্যানেজার নাসিম বলেন,”অল্প পয়সার সব অপারেশন এ্যানেসথেসিওলজিস্ট বাদেই হয়। কুষ্টিয়াতে এমন কোন ক্লিনিক নেই যে নিয়মকানুন মেনে অপারেশন করে বা চিকিৎসা দেয়।”
ছাড়পত্রে উল্লেখিত এ্যানেসথিওলজিস্ট ডাঃ তায়েফ উদ্দিন মুঠোফোনে জানান,তিনি শাওন ক্লিনিক চেনেনই না।তাছাড়া দুইবছর তিনি কুষ্টিয়াতেও আসেননি।”
ছাড়পত্রে উল্লেখিত সার্জন ডাঃ আশিকুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে আশিক আরেফিন নামে পরিচয় দেন এবং অপারেশন তিনি করেছেন বলে স্বীকার করেন।তবে এ্যানেসথেসিওলজিস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা জানাতে ব্যর্থ হন।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডাঃ এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান,এ্যানেসথেসিওলজিস্ট বাদে অপারেশন করা যাবেই না।অপারেশন করলে জরিমানা সহ ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হবে।