অথই নূরুল আমিন
এই লেখাটির মুল লেখায় আসার আগে একটু অতিতে যেতে চাই। তা হচ্ছে ওয়ান ইলেভেন। সেই ওয়ান ইলেভেনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চারজন উপদেষ্টাই দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন। তৎকালীন মন্ত্রী এমপিরা গণহারে গ্রেফতার হলেন। এমনকি সয়ং প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও দুর্নীতির জন্য গ্রেফতার হলেন। কেউ কেউ দেশ ছাড়লেন। এদিকে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পযর্ন্ত ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি করার অপরাধে, সেই ওয়ান ইলেভেনে শেখ হাসিনা সহ অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেফতার হলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে। এ যেন জীবনে কঠিন লজ্জা আর লজ্জা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো। ড. ফখরুদ্দিন সরকার দুর্নীতির জন্য রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করলেন। অবশেষে ড. ফখরুদ্দিন, সেনাপ্রধান মইন উদ্দিন আহমেদ সহ নির্বাচনের পর তারাও আওয়ামী লীগ সরকারের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন। সাথে নিয়ে গেলেন মোটা অংকের টাকা। এখন বলুন। কে ভালো। কে মন্দ?
সে যাক এদিকে ২০২৪ শে ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর থেকেই আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সহ অনেকেই পলাতক রয়েছেন। অনেকেই গ্রেফতার হচ্ছেন। এবং গ্রেফতার অভিযান চলমান রয়েছে।
আমার কথা হলো ওয়ান ইলেভেন এলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টারা দুর্নীতির জন্য কেউ গ্রেফতার হলেন কেউ পালিয়ে গেলেন। ওয়ান ইলেভেনে খালেদা হাসিনা দুজনই দুর্নীতির অপরাধে জেল খাটলেন ।
আজকে দুই মাস ধরে আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী এমপি ব্যবসায়ী আমলা সহ সহস্রাধিক দুর্নীতিবাজ গ্রেফতার হলেন । হাজার হাজার দুর্নীতিবাজ নেতাকর্মী ভারত আমেরিকা দুবাই সিঙ্গাপুর সহ দেশের বিভিন্ন দেশে চলে গেলেন ।
আমার কথা হলো একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যখন এলো। এখানে একজন প্রধানমন্ত্রীর বাসার কাজের লোকসহ উপদেষ্টা পযর্ন্ত সব ক্ষেত্রেই জনবল লাগবে। এটা তো ঠিকই আছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কোনো কারণে ক্ষমতা হারানোর পর অন্য যারা ক্ষমতায় আসবে। তারা কি শুধু শুধু সবাইকে গ্রেফতার করবে? নাকি যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। তারা কি আসলেই অপরাধী? নাকি কোনো যড়যন্ত্র নাকি এটাকেই রাজনীতি বলে।
আজকে যাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। ওরা যদি অপরাধী হয়ে থাকে তাহলে তো গ্রেফতার হবেই। পালিয়ে যাবেই। আমি মনে করি গ্রেফতার হওয়াও লজ্জার, পালিয়ে যাওয়াটাও লজ্জার। তাহলে এই জাতির মান ইজ্জত? এই জাতির মান ইজ্জত যারা সারা দুনিয়া জুড়ে নষ্ট করছে। দুর্নীতি করে করে বারবার। ওদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে। আজকের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় অধিদপ্তরে ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে শতাধিক উপদেষ্টা পরিচালক নতুন করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখন কথা হলো ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের এই উপদেষ্টা বা পরিচালক গণ নির্বাচনের পর আরেকটি নতুন সরকার বসার পর। ইউনূস সরকারের এই উপদেষ্টা গণ অথবা সয়ং ইউনূস তারা কি সুস্থ ভাবে যার যার বাড়িতে যেতে পারবেন।
নাকি নির্বাচনের দিনগত রাতেই পলাবেন, নাকি রাস্তা থেকেই পরবর্তী সরকার গ্রেফতার করা শুরু করবে দুর্নীতির জন্য? এভাবেই যদি এই দেশটা সারাজীবন চলতে থাকে। এর শেষ কোথায়? আমার কথা হলো এই জাতির ইজ্জত তো বিদেশিদের কাজে আর নেই। শোনা যায়, ঘৃণা করছে বিশ্ব নেতারা শেখ হাসিনাকে ।তার মন্ত্রী পরিষদসহ সবাইকে। তাই কোনো দেশেই আশ্রয় দিতে চাচ্ছে না কেউ শেখ হাসিনাকে । তাহলে সমগ্র জাতির চরিত্র রাজনৈতিক নেতারা সারাজীবন নষ্ট করবে। ক্ষমতায় যতদিন থাকবে বাহাদুরি করবে। চুরিও করবে। ক্ষমতা হারানোর পর জেল খাটবে। নতুবা দেশ ছেড়ে চলে যাবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্ষমতাবানেরা চুরি করবেই। এভাবে কি সারাজীবন ফুলবলের মতো লাথি খেতেই হবে? সত্যি কি এই দেশটা আর কখনও সুন্দর হবে না। রাজনীতি করতে করতে গোটা জাতি আজকে মহা চোরে পরিণত হয়েছি?
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিস্ট ও রাষ্ট্র বিজ্ঞানী