নাগরপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধিঃ
পবিত্র ঈদুল আযহার আর মাত্র একদিন বাকি। রাজধানী ঢাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ এখন পরিবারের টানে গ্রামে ফিরছেন।ঈদের ছুটিতে টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার প্রায় ১২টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ বাড়িমুখো হচ্ছেন।
অথচ এই আনন্দঘন মুহূর্তে নাগরপুরের সাধারণ যাত্রীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। বিশেষ করে ঈদকে কেন্দ্র করে নাগরপুর বটতলা এলাকার সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকদের দৌরাত্ম্য চরমে উঠেছে। যাত্রীদের জিম্মি করে আদায় করা হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া।
৫ জুন বৃহস্পতিবার ২০২৫ সন্ধা থেকে দেয়া যায় বটতলা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন সিএনজি চালকরা।
বটতলা – ভাদ্রা: স্বাভাবিক ভাড়া ৩০ টাকা, ঈদ উপলক্ষে নেওয়া হচ্ছে দিনের বেলায় ৪০ টাকা রাতের বেলায় ৫০ টাকা,
বটতলা – তেবাড়িয়া: ৩০ টাকার ভাড়া এখন ৪০ টাকা
বটতলা – গয়হাটা: ১০ টাকার ভাড়া ২০ টাকা
বটতলা – খোরশেদ মার্কেট: ২০ টাকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা
বটতলা – সহবতপুর: ২০ টাকার স্থলে ৩০ টাকা
বটতলা – টাঙ্গাইল শহর: ৭০ টাকার ভাড়া এখন দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকা
বটতলা-চৌহালী: ৪০ টাকার ভাড়া গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা
এই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ফলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নারী, শিশু, এবং বৃদ্ধ যাত্রীরা। অনেকেই বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে বাড়ি ফিরছেন, আবার কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প পথে হাঁটছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতি ও প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা।
নাগরপুরের বটতলা ঈদের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি যাত্রীবাহী কেন্দ্র হয়ে ওঠে। অথচ এবারের ঈদ মৌসুমে সেখানে কোনো প্রকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাজার হাজার যাত্রীর যাতায়াত থাকলেও নেই পুলিশের টহল, নেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান।
উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি মুঠোফোনে জানান, আমি ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আছি, ইউএনও স্যারকে বিষয়টা অবগত করতেছি।
অন্যদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কে একাধিকবার ফোন করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। নাগরপুর থানা ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন আমি ডেঙ্গু পজেটিভ হওয়া সত্ত্বেও নাগরপুর বাসীর সেবার লক্ষে বিভিন্ন গরুর হাট নিরাপত্তার জন্য পরিদর্শন এবং ঈদ উপলক্ষে পরিবহনে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে যাত্রীদের নিকট থেকে বেশী ভাড়া যাতে করে আদায় না করে সে জন্য চারাবাগ বাসষ্ট্যান্ড কর্তৃক পক্ষের সাথে এবং তালতলা ও বটতলা সিএনজি ষ্ট্যান্ডে ড্রাইভারদের সাথে কথা বলি।
এমন পরিস্থিতিতে নাগরপুর সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, এখন তো রাত হয়েছে রাতের বেলা বের হওয়া সম্ভব নয়, আগামীকাল সকালে এসে দেখবো বিষয়টা।
জনদুর্ভোগে প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ
সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, যখন দেশের অন্যান্য উপজেলায় ঈদ ব্যবস্থাপনায় প্রশাসন তৎপর, তখন নাগরপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় এমন চরম বিশৃঙ্খলা কীভাবে হচ্ছে?
স্থানীয় এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গরু ছাগল কিনতে আসা লোকজনের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে। ঈদের সময় বলে চালকরা ইচ্ছেমতো টাকা নিচ্ছে, কেউ কিছু বললে বলে – না গেলে নেমে যান।
দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জনসাধারণের
নাগরপুর উপজেলার জনগণ স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ঈদের এই আনন্দঘন সময়ে যেন কেউ দুর্ভোগের শিকার না হয়, সেজন্য দ্রুত সিএনজি ভাড়ার নির্ধারিত তালিকা প্রকাশ, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
Appreciate you sharing this.