ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ঃ
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আন্তঃ জেলা মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে দীর্ঘবছর ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের পরিচালনায় চলছে গরু-মহিষের গরু বাজার। মহাসড়কের উপর গরু-মহিষের বাজার হওয়ায় প্রতিনিয়ত দ্বীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে বলে ধারণা করছেন সচেতন মহল। দীর্ঘ যানজটের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ঈদ মৌসুমে নাড়ীর টানে ঘরে ফেরা বাসযাত্রীদের। দুর্ভোগের শেষ নেই স্থানীয় পথচারী ও শিক্ষার্থীদের।
ঈদগাঁও উপজেলায় অবস্থিত দক্ষিণ চট্টলার বৃহত্তর ঈদগাঁও বাজারে দোকানপাট, শপিংমল, রেষ্টুরেন্ট, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্টান ও ব্যাংক-বীমাসহ প্রায় ৮ হাজারেরও অধিক ছোট বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অন্যদিকে বাসস্টেশন ও পার্শবর্তী এলাকায় রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান। অদূরে ঈদগাঁও থানা। এসবকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বৃহৎ আবাসিক এলাকা।
জানা যায়, হাট-বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন ২০২৩, মহাসড়ক আইন ২০২১ অনুযায়ী সারাদেশে মহাসড়কের উপর কোরবানির হাট বসানো সরকারি বিধি নিষেধ থাকলেও ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট ঈদগাঁও গরু-মহিষের হাট পরিচালনা করছে।
আরো জানা যায়, ঈদগাঁও গরু বাজারের এ সনের ইজারাদার খরুলিয়ার আব্দু রহিম হলেও কমিশনে ঈদগাঁও বাজারটি সাব-ইজারা নেয় একটি ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট। অথচ ইজারা চুক্তিপত্রে সাবইজারা দেওয়া যাবেনা বলে বাধ্য বাধকতা রয়েছে। এমনকি মহাসড়কের উপরে যানজট সৃষ্টি করে কোরবানি পশুর হাট বসানোরও বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইনি বাধ্য বাধকতা থাকার পরেও অবাধে গরু-মহিষের হাট বসানো প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখানোর মত।
কলেজ শিক্ষার্থীরা জানান,গরু বাজারের উপর দিয়ে কলেজে যাতায়াতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। আমরা যারা হেঁটে যাতায়াত করছি তারা দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার আশংকা রয়েছে। প্রশাসনের প্রতি আবেদন গরু বাজার যেন আমাদের যাতায়াতের রাস্তা মহাসড়কের উপর থেকে সরানো হয়।
কোরবানি পশুর হাটের পার্শ্ববর্তী মেহেরঘোনার কজন সচেতন লোকজন জানান, মহাসড়ক হয়ে আমাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। গরু বাজারটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুয়েক গরু ক্রেতা জানান গতবাজারে ঈদগাঁওর গরু বাজার থেকে একটি গরু কিনে ক্রেতার পক্ষে হাসিলের টাকার পরিমান শুনে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যায়। পরে তর্কাতর্কিতে আমি ১০০০ টাকা আর যিনি বিক্রি করেছেন তিনি ১৫০০ টাকা হাসিল দিয়ে গরু নিয়ে বাড়ি চলে যায়। অন্যান্য গরু বাজারে তুলনায় এই বাজারের হাসিলের টাকার পরিমান অনেক বেশি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরেক গরু বিক্রেতা জানান, ঈদগাঁও বাজার উপজেলার বৃহত্তর বাজার বলে হাট-বাজারের দিন গরু নিয়ে আসি কিন্তু মহাসড়কের উপরে গরু বাজার বসায় গাড়ি হর্ণে গরু লাফালাফি করে ফলে নানান সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। বড় বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার কোন ধরণের হাসিলের বিলবোর্ড টাঙানো নেই। ফলে যে যার মত হাসিল আদায় করছে।
ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম বলেন, আগে থেকে অবগত আছি যে মহাসড়কের দুই পাশে পশুর হাট বসানো আইনগত অপরাধ, যেহেতু পশুর হাটের জন্য ঈদগাঁওতে দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে তাই আমরা উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে রেখেছি, যদি কোনভাবে পশুর হাট রাস্তায় বসানো হয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আইনি পদক্ষেপ নিব।
ঈদগাঁও বাজারের মূল ইজারাদার আব্দু রহিমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।