নাগরপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি ঃ
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জেরে একজন নিহত এবং অন্তত চারজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনার সাথে উপজেলা বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার নাম জড়িয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে চলা বিরোধের এক পর্যায়ে বিএনপি নেতা মো. বাদশা মিয়ার নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১৯ মে) সকাল ৬টার দিকে নাগরপুর উপজেলার মামুদ নগর ইউনিয়নের সুদামপাড়া গ্রামে। নিহত আব্দুল জব্বার (৫০) ঐ গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন – রবিউল (২১), আজিজ (৩৫), আলী (৫৫), ও লাল হোসেন (৫০)। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহত জব্বার মিয়া বাদশা মিয়ার চাচাতো ভাই বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাদশা মিয়ার সঙ্গে তার চাচাতো ভাই জব্বারের জমি-সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। উক্ত জমি সংক্রান্ত বিষয়টি আদালতে মামলাধীন থাকা সত্ত্বেও বাদশা মিয়া এবং তার লোকজন রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। বাদশা মিয়া উপজেলা বিএনপির তাঁতী, মৎস্যজীবি ও উপ-জাতি বিষয়ক সম্পাদক এবং মামুদ নগর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সূত্র মতে, গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে বাদশা মিয়া রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দখল প্রক্রিয়া জোরদার করেন। গত রোববার (১৮ মে) আদালতে হাজিরা শেষে রাতে বাদশা ও তার সহযোগীরা জব্বারের পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং উসকানিমূলক আচরণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে বাদশা মিয়া দলবলসহ জব্বারের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। বেধড়ক মারধরের ফলে জব্বার গুরুতর আহত হন। সঙ্গে থাকা অন্যান্যরা রক্ষা পেতে চেষ্টা করলেও হামলাকারীদের হাত থেকে রেহাই পাননি।
পরিবার ও স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল জব্বারকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফারহানা আফরোজ জানান, জব্বার মিয়াকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
স্থানীয় জনগণের দাবি, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এমন বর্বর ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়।