নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি ঃ
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর এক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ভাদ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী (৪৫) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে ভাদ্রা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃত শওকত আলী উপজেলার খাগুরিয়া গ্রামের মো. জয়নাল আবেদীনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি হামলায় নেতৃত্বদানকারী দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ভাদ্রা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন থেকে শওকত আলীকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।”
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট নাগরপুর বাজারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলছিল। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের প্রতিবাদে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। এই সময় হঠাৎ একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় অন্তত কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত ছাত্র মনির মিয়া বাদী হয়ে টাঙ্গাইলের বিজ্ঞ আদালতে ১২৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন, যার মধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে এবং বাকিদের অজ্ঞাত আসামি করা হয়। মামলায় হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও মদদদাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
মামলার পর থেকেই অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ভাদ্রা ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলীকে গ্রেফতার করা হয়, যাকে স্থানীয় রাজনীতিতে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ঘটনার পর থেকেই নাগরপুরে শিক্ষার্থী ও সচেতন মহলের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে এই গ্রেফতারকে ন্যায়বিচারের প্রথম ধাপ হিসেবে দেখছেন এবং বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি তুলছেন।
এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গ্রেফতারের খবরে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক অঙ্গনেও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বিষয়টিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে দেখলেও প্রশাসন বলছে, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলছে এবং যেই দোষী হবে, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
নাগরপুর থানার ওসি বলেন, “আমরা কারো পরিচয় নয়, অপরাধকে গুরুত্ব দিচ্ছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”