নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদগাঁও, কক্সবাজার ঃ
জাতীয় ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত মানবিক করিডোর দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সর্বদলীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন রয়েছে। রোহিঙ্গাদের সাথে আমাদের সুসম্পর্ক থাকবে কিন্তু তাদেরকে করিডোর দেয়া হলে আরাকার আর্মি এ করিডোর দিয়ে অস্ত্রসহ ঝুঁকিপূর্ণ জিনিসপত্র পরিবহন করবে। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ঝুঁকির মুখে পড়বে।
নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করে দেশের সম্ভাবনাময় একটি দ্বীপকে রোহিঙ্গা দের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। যা দেশের জন্য কখনো শুভ হতে পারে না। স্থানীয়রা প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গা কর্তৃক অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হচ্ছেন। প্রশাসনের দারস্থ হলেও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
রোহিঙ্গাদের কারণে এলাকার আইন-শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি ঘটছে। এখানকার পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। তাই মানবিক করিডোর বিষয়ে আরো ব্যাপক আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের কারণে আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী লাভবান হলেও স্থানীয় মানুষজন অবর্ণনীয় দূর্ভোগে রয়েছেন।
সোমবার বিকেলে কক্সবাজারে “রোহিঙ্গা সংকট ও মানবিক করিডোর” শীর্ষক নাগরিক ভাবনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটি, কক্সবাজার জেলা শাখা এর আয়োজন করেছে। কক্সবাজারের পর্যটন মোটেল শৈবালের সাগরিকার রেস্টুরেন্টে এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল। প্রধান অতিথি ছিলেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব ডক্টর মোহাম্মদ জকরিয়া।
প্রধান আলোচক ছিলেন, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্নেল অবঃ আশরাফ আল দীন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান ও কো- চেয়ারম্যান কবি এটিএম ফারুক আহম্মেদ। সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির কক্সবাজারের আহ্বায়ক আলহাজ্ব মোঃ আব্দুস শুক্কুর সিআইপি। স্বাগত বক্তা ছিলেন উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী।
মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জাতীয় কমিটির কো- চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ ইউনুস হাসান চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের জেলা সমন্বয়ক এম ইউ আর মাসুদ।
উপস্থিত ছিলেন, টোয়াকের সভাপতি রেজাউল করিমসহ জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। বক্তারা আরো বলেন, ১ লক্ষ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা শীঘ্রই প্রত্যাবাসন শুরু হবে বলে ঘোষণা দেওয়ার এক সপ্তাহ না হতেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার নতুন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
আলোচকরা বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন একটা আন্তর্জাতিক বিষয়, সে হিসেবে আমরা চাই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হোক। রোহিঙ্গারা যাতে সেখানে গিয়ে তাদের অধিকার গুলো ফিরে পায়, তাদের চলাফেরা, তাদের বসবাসের জায়গায়, তাদের কৃষি জমি যাতে ফিরে পায়, অবাধে যাতে তারা নাগরিক সুবিধা গুলো ফিরে পায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সরকার যদি হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, মানবিক করিডোর’ দেয়ার। তবে এ সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী হতে পারে। এ বিষয়টা দেশবাসী, কক্সবাজার, উখিয়া, টেকনাফের জনগণ কখনো মেনে নিবে না, সরকারকে এত বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে স্থানীয় প্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আগামী ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর উপলক্ষে খ্যাতিমান গবেষক, রাস্ট্রচিন্তক, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও বিশিষ্টজনদের লেখা ও বাণী নিয়ে স্মরণিকা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।