এম আবু হেনা সাগর
ঈদগাঁও, কক্সবাজার ঃ
কক্সবাজারের ঈদগাঁওর একমাত্র স্রোতধারা ফুলেশ্বরী নদী (ঈদগাঁও খাল) এখন দখল ও দূষণে ক্ষত-বিক্ষত। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ নীরব, যেন দেখার কেউ নেই।
দক্ষিণ চট্রলার বৃহৎ ঈদগাঁও বাজার, বাস স্টেশন ও নদী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলায় গতিপথ বন্ধের উপক্রম দেখা দিয়েছে। ফুলেশ্বরী নদী ঈদগড়ের পাহাড়ী এলাকা থেকে উৎপত্তি হয়ে ঈদগড় বাজার, গজালিয়া, ভোমরিয়াঘোনা, ঈদগাঁও, জালালাবাদ, পোকখালী হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। এটি একটি পুরাতন নদী।
সুত্র মতে, এ নদীর পানি দিয়ে ঈদগড়, ঈদগাঁও, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ, চৌফলদন্ডী ও পোকখালী ইউনিয়নে অসংখ্য জমির ধান চাষ করা হয়। এই নদী দিয়ে একসময় বর্ষায় মাল বোঝাই নৌকা, ইন্জিনচালিত বোট ও কার্গো বোট চলাচল করত। দুষণ ও কালের বিবর্তনে সে দিন এখন হারানো স্মৃতি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদগাঁও ষ্টেশন ব্রীজের পশ্চিম দিকে, বাঁশঘাটা ব্রীজের আগে ও পরে বাজারের সব বর্জ্য, পলিথিন, প্লাস্টিকের অপচনশীল বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। এসব দুষণে ঈদগাঁও নদী ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়। এছাড়া বাঁশঘাটাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে এ খাল দখলে বন্দি।
শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, নদীর দু’পাশে দোকানদার বা জায়গার মালিক প্রতিনিয়ত আবর্জনা ফেলেন। এতে ধীরে ধীরে তাদের জায়গা প্রশস্ত হয়, কেউ কেউ তা দখল করে নেন। ফলে ক্রমশ নদী সংকুচিত হচ্ছে। পরিবেশের উপর এর বিরূপ প্রভাবে জনগণ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এই নদীকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়া আশু প্রয়োজন।
ইসলামাবাদ ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, যারা অবৈধভাবে দখল করে নদী ভরাট করতেছে। তাদের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। সেসাথে আগেকার দিনের মত খালের পানি যেন ব্যবহার করতে পারে সে ব্যবস্থার জন্যও বলবো।
যারা নদী খেকো তাদেরকে চিহ্নিত করে যদি তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে নদী রক্ষা সম্ভব নয় বলে জানান পরিবেশ আন্দোলন, ঈদগাঁও উপজেলা সভাপতি কাফি আনোয়ার।
খাল পাড়ের লোকজন জানান, নদীতে নানা ধরনের বজ্য ফেলায় পানি কালো হয়ে যাচ্ছে। পূর্বেকার দিনে পানি পরিস্কার ছিল। যার কারনে গোসলসহ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ঈদগাঁও নদীর পানি।
ময়লা ফেলার সুনির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীসহ লোকজন ঈদগাঁও নদীতে ফেলছে নানা রকমের বজ্য। এছাড়া সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের তদারকি না থাকায় দখল থাবায় ক্ষত-বিক্ষত নদীটি।
সচেতন মহল জানান, মাছের অভয়ারণ্য ও সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক পরিবেশ আর কৃষিকে বাঁচাতে হলে ফুলেশ্বরী নদীকে দুষণের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
ঐতিহ্যবাহী ঈদগাঁও নদী দুষণের হাত থেকে রক্ষাসহ বাজারের নাগরিক বর্জ্য-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী।
gjveyc