মোঃ বিল্লাল হোসেন,
শেরপুর থেকেঃ
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর ডাকাবরে একটি সেতুর অভাবে ১৫ গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি উঠে দেশ স্বাধীনের পর থেকেই। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে আশ্বাস ও পাওয়া গেছে। কিন্তু দীর্ঘ ৫৫ বছরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা বলেন, বিগত বিএনপি সরকারের সময়ে এ নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য আর্থিক বরাদ্দ পাওয়া যায়। টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার ও নিয়োগ দেয়া হয়। কাজ শুরুর প্রস্তুতিও নেয় ঠিকাদার। কিন্তু দুই নেতার আধিপত্য বিস্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র কাজটি বন্ধ হয়ে যায়।
আদিবাসী নেত্রী রবেতা ম্রং বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে শুধু শোনে আসছি সেতু হবে। রাস্তা হবে। কিন্তু তা হচ্ছে না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন মরার আগে সেতু দেখে যেতে পারবো কি না জানিনা। ডাকাবর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম, মোসলেম উদ্দিন,সোলাইমান, শহিদুল ইসলাম, মোতালেব হোসেনসহ গ্রামবাসীরা আক্ষেপের সুরে বলেন নির্বাচনের সময় এলে এ নদীর উপর সেতু নির্মাণ করে দেয়ার নাম করে শুধু আমাদের কাছে ভোট নেয়। কিন্তু নির্বাচনের পর কেউ আর আমাদের খোঁজখবর নেন না। তারা বলেন এ নদীর উপর একটি সেতুর অভাবে ১৫ গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় । গ্রামবাসীরা জনগণের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে জরুরি ভিত্তিতে এ নদীর উপর একটি সেতু নির্মানের দাবি জানান।
জানা গেছে, ডাকাবর রামেরকুড়া,নুনখোলা, শালচুড়া, ডেফলাই, নলকুড়া,গজারিকুড়া ফাকরাবাদ, বনকালি, মরিয়মনগর,ভারুয়া, জারুলতলা,বাঐবাধা, কুসাইকুড়াসহ ১৫টি গ্রামের শতশত মানুষ প্রতিদিন এপথে যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু এ নদীর উপর সেতু না থাকায় শুস্ক মৌসুমে বাসের সাঁকো ও বর্ষা মৌসুমে পাঁচ কিলো রাস্তা ঘুরে উপজেলা সদরে আসতে হয়। কোন কোন সময় নৌকা যোগে পারাপার হতে হচ্ছে। এ সময় স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিশু কিশোররা স্কুল-কলেজে যাতায়াতের সময় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। গরু ছাগল পারাপারে কৃষকদের হতে হয় নানা বিড়ম্বনার শিকার। নলকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুকুনুজ্জামান বলেন এ নদীর উপর একটি সেতু নির্মানের দাবি উঠে দেশ স্বাধীনের পর থেকেই। এ নদীতে একটি সেতু নির্মানের বিষয়ে বিভিন্ন সময় উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় আবেদন নিবেদনও করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিও প্রশাসনের কাছ থেকে আশ্বাসও পাওয়া গেছে। কিন্তু আজো তা বাস্তবায়িত হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে শেরপুরের এলজিইডি’ র নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমানকে ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি। ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক বলেন এ নদীর উপর একটি সেতু নির্মানের বিষয়ে প্রকল্প প্রনয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে নির্মাণ করা হবে।