ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ফসলী জমির টপসয়েল উপরিভাগের মাটি কর্তনের হিড়িক থামছেনা। ফসলী জমির উর্বর মাটি গুলো কেটে নেওয়ার জমিগুলো যেমন উর্বরা হারাচ্ছে, তেমনি সমতল ভুমিগুলো নিচু হয়ে যাওয়ার পানি প্লাবিত হয়ে থাকবে প্রতিবছর। যার ফলে, উপজেলার বিভিন্ন অংশে শত শত একর ফসলী জমি চাষাবাদ অনিশ্চিতের আশঙ্কায় রয়েছেন অনেকে।
জমির মালিকদের অসচেতনতা এবং অভাবকে পুঁজি করে একশ্রেণীর দালালচক্র জমির উপরিভাগের মাটি স্বল্পদামে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। দালাল চক্রটি উচ্চমুল্যে মাটিগুলো ইটভাটাসহ বিভিন্নস্থানে বিক্রি করছে। এতে করে বিভিন্ন ফসলী জমিগুলো দ্রুত হারিয়ে ফেলছে তার উর্বরা শক্তি। একই সাথে প্রতিবছর জমির উপরিভাগের মাটি তুলে নিয়ে যাওয়ার কারনে জমি নিচু হয়ে যাওয়ায় পানি জমে থাকার কারনেও আবাদযোগ্যতা হারাচ্ছে জমিগুলো। জানা যায়, ফসলী জমিগুলোর উপরিভাগ মাটি কর্তন শুরু করে এক শ্রেণীর মাটিখেকোরা।
ঈদগাঁওতে স্থাপিত বেশকটি ইটভাটার মালিকরা ইট তৈরীর মৌসুম শুরুর সাথে সাথে দালালদের লাগিয়ে দেয় আবাদী জমির মাটি সংগ্রহের কাজে। এ এলাকার আবাদী জমিগুলোর মাটি এটেল জাতের হওয়ায় এ মাটি দিয়ে তৈরী করা ইট শক্ত ও সুন্দর হয়। সে কারনে ইটভাটার মালিকরা উচ্চমূল্যে দালালদের কাছ থেকে মাটি কিনে নিচ্ছে। কৃষকরাও এক প্রকার নিরুপায় হয়ে তাদের ফসলের জমি থেকে মাটির উপরি অংশ বিক্রি করে দিচ্ছে উচ্চমূল্যের আশায়। জমি মালিক ও কৃষকদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে টপসয়েল কাটছে। যদি তা বন্ধে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে ঈদগাঁও উপজেলার আবাদি ফসলি জমির চাষাবাদ অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে ।
তাই তারা অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। প্রাপ্ত তথ্য মতে, ঈদগাঁও ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মাইজপাড়া ঝাইক্কা কাটা বিল ও জালালাবাদসহ বিভিন্ন স্থানে চলছে ফসলি জমির টপসয়েল কাঁটা। রাতের আঁধারে একাধিক ডাম্পার যোগে মাটির উপরিভাগ লুট করে পাচার করা হচ্ছে ইটভাটায় বা বাড়ীঘর স্থাপনার কাজে। অথচ উপজেলা ও স্থানীয় প্রশাসন নীরব দশকের ভূমিকায়।
সচেতন ব্যাক্তি আ.ন.ম মাসুদ রানা লিখেন, ঈদগাঁও ধমকা বিল নিয়ে আমার প্রতিবাদ। কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সংগঠনের বিরুদ্ধে নয়।ঈদগাঁও ধমকা বিলকে বাঁচতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরী।ঈদগাঁওতে জমির টপসয়েল লুট কারীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে দাবী জানাচ্ছি। উপজেলাও স্থানীয় প্রশাসন ম্যানেজ করেই ঈদগাঁও উপজেলার ফসলী জমির টপসয়েল লুট করা হচ্ছে বলেও আরেক যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন।
চাষাবাদের জমি রক্ষার্থে উপজেলা ও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে অভিযান পরিচালনা করা এখন সময়ের যোক্তিক দাবী বলেও মত প্রকাশ করেন এলাকার সচেতন মহল।