ঈদগাঁও ( কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ফসলী জমির টপসয়েল উপরিভাগের মাটি কর্তনের হিড়িক পড়েছে। ফসলী জমির উর্বর মাটি গুলো কেটে নেওয়ার জমিগুলো যেমন উর্বরা হারাচ্ছে, তেমনি সমতল ভুমিগুলো নিচু হয়ে যাওয়ার পানি প্লাবিত হয়ে থাকবে প্রতিবছর। যার ফলে, উপজেলার বিভিন্ন অংশে শত শত একর ফসলী জমি চাষাবাদ অনিশ্চিতের আশঙ্কায় রয়েছেন অনেকে।
জমির মালিকদের অসচেতনতা এবং অভাবকে পুঁজি করে একশ্রেণীর দালালচক্র জমির উপরিভাগের মাটি স্বল্পদামে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। দালাল চক্রটি উচ্চমুল্যে মাটিগুলো ইটভাটাসহ বিভিন্নস্থানে বিক্রি করছে। এতে করে বিভিন্ন ফসলী জমিগুলো দ্রুত হারিয়ে ফেলছে তার উর্বরা শক্তি। একই সাথে প্রতিবছর জমির উপরিভাগের মাটি তুলে নিয়ে যাওয়ার কারনে জমি নিচু হয়ে যাওয়ায় পানি জমে থাকার কারনেও আবাদযোগ্যতা হারাচ্ছে জমিগুলো। জানা যায়, ফসলের মাঠ থেকে সোনালী আমন ধান কাটা শেষ হতে না হতেই ফসলী জমিগুলোর উপরিভাগ মাটি কর্তন শুরু করে এক শ্রেণীর মাটিখেকোরা। ঈদগাঁওতে স্থাপিত বেশকটি ইটভাটার মালিকরা ইট তৈরীর মৌসুম শুরুর সাথে সাথে দালালদের লাগিয়ে দেয় আবাদী জমির মাটি সংগ্রহের কাজে।
এ এলাকার আবাদী জমিগুলোর মাটি এটেল জাতের হওয়ায় এ মাটি দিয়ে তৈরী করা ইট শক্ত ও সুন্দর হয়। সে কারনে ইটভাটার মালিকরা উচ্চমূল্যে দালালদের কাছ থেকে মাটি কিনে নিচ্ছে। কৃষকরাও এক প্রকার নিরুপায় হয়ে তাদের ফসলের জমি থেকে মাটির উপরি অংশ বিক্রি করে দিচ্ছে উচ্চমূল্যের আশায়। জমি মালিক ও কৃষকদের দাবি বিগত এক সপ্তাহ ধরে এ অবস্থা চলে আসছে। যদি তা বন্ধে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে ঈদগাঁও উপজেলার আবাদি ফসলি জমির চাষাবাদ অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে ।
তাই তারা অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। জানা যায়, সপ্তাহকাল ধরে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে ঈদগাঁও উপজেলার চাষযোগ্য বিভিন্ন ইউনিয়নের ফসলি জমিতে অবৈধ ডাম্পারের বেপরোয়া চলাচল শুরু হয়। দেখা যায় রাতের আধাঁরে দৈত্যকারে স্কেভেটর দিয়ে ফসল জমির টপসয়েল কেটে ডাম্পার ভর্তি করে মাটিখেকোরা উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটা ও অন্যান্য স্থানে সরবরাহ করে যাচ্ছেন। উপজেলার উল্লেখযোগ্য চাষের আবাদি জমি গুলো হচ্ছে ঈদগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজ পাড়া, ঝাইক্কা কাটা বিল, জালালাবাদের ধনকা বিল,চৌফলদন্ডীর বিল, পোকখালীর বিল, ইসলামাবাদের পূর্ব -পশ্চিম বিল এবং ইসলামপুরের বিল।
ঈদগাঁও আয়তনের দিক দিয়ে অতি ছোট একটি উপজেলা। বলতে গেলে উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনের নাকের ডগায় এ অপকর্ম অব্যাহত থাকলেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে চোখে পড়েনি প্রশাসনকে। এভাবে টপসয়েল লুট অব্যাহত থাকলে আগামী চাষাবাদ মৌসুমে ব্যাপক প্রভাব পড়বে এতে সন্দেহ নেই বলেও মত প্রকাশ করেন ঈদগাঁও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়ীত্ব) এক কর্মকর্তা।
ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মতে,গত মঙ্গলবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে এক সিন্ডিকেটকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত