বগুড়া দুপচাঁচিয়া উপজেলায় উম্মে সালমা খাতুনকে (৫০) হত্যার পর মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রাখার রহস্য উন্মোচন হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় র্যাব-১২ সিপিএসসি কার্যালয়ে কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
মেজর মো. এহতেশামুল হক খান বলেন, ঘটনা জানার পর র্যাব দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ছায়া তদন্ত শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে র্যাব ১২-এর আভিযানিক দল গতকাল সোমবার দিনগত রাত ১২টায় কাহালু থানার পাঁচপীর অড়োবাড়ী গ্রামে দাদার বাড়ি থেকে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ভিকটিমের ছোট ছেলে মো. সাদ বিন আজিজুর রহমানকে (১৯) গ্রেপ্তার করে। এরপর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন।
মেজর মো. এহতেশামুল হক খান আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সাদ বিন আজিজুর জানান, প্রতিদিন হাত খরচের ৫০০ টাকা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর মা সালমার সঙ্গে বিবাদ চলে আসছিল। টাকা না পেলে প্রায়ই তিনি ৫০০/১০০০ টাকা চুরি করতেন। ঘটনার দিন সকালে হাত খরচের টাকা নিয়ে তাঁর মার সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও বাকবিতণ্ডা হয়। পরে রাগ করে নাস্তা না খেয়ে তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুসসুন্নাহ কামিল মাদ্রাসায় ক্লাস করার জন্য চলে যান। মাদ্রাসায় সকাল ১১টায় ক্লাস বিরতি হলে মাদ্রাসার আশপাশ এবং তাঁর বাসার কাছাকাছি এলাকায় ঘুরে বেড়ান। পরে দুপুর সাড়ে ১২টায় বাসায় গিয়ে দেখতে পান তার মা রান্নার জন্য তরকারি কাটছেন। এ সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি মায়ের পিছন দিক থেকে নাক-মুখ চেপে ধরেন। এ সময় তার মা বাঁচার জন্য চেষ্টা করতে থাকলে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে নাক মুখ দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ করে হত্যা নিশ্চিত করেন।
মেজর মো. এহতেশামুল হক খান আরও বলেন, এরপর সাদ তার মায়ের দুই হাত ওড়না দিয়ে বেঁধে বাসায় থাকা ডিপফ্রিজে রেখে ঢাকনা লাগিয়ে দেন। এরপর ঘটনাটি ডাকাতি হিসেবে সাজানোর জন্যমী বাসায় থাকা কুড়াল দিয়ে মা-বাবার বেডরুমে থাকা আলমারিতে কয়েকটি কোপ দেন।
এরপর কুড়াল সেখানে রেখে বাসার মেইন গেটে তালা দিয়ে বের হয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর আসামি নিজেই বাসায় প্রবেশ করে তার বাবা আজিজুর রহমানকে (৫৬) ফোনে জানান মাকে বাসায় পাওয়া যাচ্ছে না। খবর পেয়ে আজিজুর রহমান বাসায় এসে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ভিকটিমের দুই ভাই ও প্রতিবেশীদের জানালে তাঁরা এলে সাদও খোঁজাখুঁজির অভিনয় শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি নিজেই ডিপফ্রিজ খুলে তার মা সালমা খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করেন। এ সময় ডাকাত দল এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
আসামি সাদ বিন আজিজুরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুঁপচাচিয়া থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানান মেজর মো. এহতেশামুল হক খান।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আবু জাহিদ
কপিরাইট ©২০২৩-২০২৪ নবদেশ ২৪ মিডিয়া লিমিটেড | সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত